ট্রাম্পের কানে লাউরা লুমা! হোয়াইট হাউসে চান্স পাচ্ছেন না কেন?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত লরা লুমারের হোয়াইট হাউজে প্রবেশাধিকার মেলেনি, যদিও তিনি নিয়মিত ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন। কট্টর ডানপন্থী হিসেবে পরিচিত লুমারের মূল চাওয়া ছিল হোয়াইট হাউজের প্রেস-এর স্বীকৃতি। কিন্তু সেই সুযোগ থেকে তিনি এখনো পর্যন্ত বঞ্চিত।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনদের মধ্যে অন্যতম লরা লুমারের হোয়াইট হাউজে প্রবেশের অনুমতি না পাওয়ার পেছনে একটি কারণ থাকতে পারে। লুমারের ধারণা, হোয়াইট হাউজের ভেতরে থাকা কিছু ব্যক্তির আনুগত্য নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলতে পারেন, এমনটা মনে করা হয়। কারণ তিনি মনে করেন, এই ধরনের প্রশ্ন তোলার জন্য তার একটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম দরকার।

হোয়াইট হাউজের ভেতরে থাকা কর্মকর্তাদের একাংশের আনুগত্য নিয়ে লুমারের মনে সন্দেহ রয়েছে। বিশেষ করে, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনকে এখনো কেন সিক্রেট সার্ভিস সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। এছাড়া, হোয়াইট হাউজের আইনি দল কেন এমন কিছু বিচারককে অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য চাপ দিচ্ছে না, যাদের সঙ্গে তার বিরোধ রয়েছে। এমনকি, বিতর্কিত আনুগত্যের অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কেন, সেই প্রশ্নও তিনি তুলেছেন।

লুমারের মতে, তিনি কেবল ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডাকে সমর্থন করার জন্য এইসব কর্মকর্তাদের জবাবদিহি করতে চান। তবে, হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে, লুমারের এই ধরনের সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি অনেক সময় ডানপন্থী গণমাধ্যমেও বিরল। কারণ, তার অনেক সহকর্মী ট্রাম্পের বিভিন্ন কার্যক্রমকে সমর্থন করেন এবং প্রশাসনের বক্তব্যকে তুলে ধরেন। কিন্তু লুমারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তিনি প্রায়শই ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করেন এবং তার সমালোচকদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।

সম্প্রতি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজের পদত্যাগের পেছনেও লুমারের সমালোচনার প্রভাব ছিল। তিনি ওয়াল্টজের কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন। এর ফলস্বরূপ, ট্রাম্প কয়েকজন শীর্ষ নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বরখাস্ত করেন এবং ওয়াল্টজকে জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেন। লুমারের মতে, তিনি যদি হোয়াইট হাউজের ব্রিফিংয়ে এই নিয়োগগুলো নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন করতে পারতেন, তাহলে হয়তো এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত।

তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা লুমারের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চান। কারণ, অতীতে লুমারের কিছু বিতর্কিত মন্তব্য এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারের কারণে তার সমালোচনা হয়েছে। এমনকি, গত বছর ট্রাম্পের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কারণে তার সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত করা হয়েছিল।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সম্প্রতি ‘নতুন গণমাধ্যম’-এর প্রতিনিধিদের হোয়াইট হাউজে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই ব্যবস্থায় প্রেস রুমে একটি আসন ঘোরানো হতো। এই প্রসঙ্গে, ট্রাম্পের সাবেক প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসার বলেন, লুমারের এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ হতে পারে, হোয়াইট হাউস ‘নতুন গণমাধ্যম’-এর সংজ্ঞা কীভাবে নির্ধারণ করে। লুমের নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে দাবি করলেও, প্রশাসন তাকে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *