রোমানিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগের মধ্যে ভোট গ্রহণ
ইউরোপের দেশ রোমানিয়ায় সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পুনরায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়া আগের নির্বাচনটি বাতিল করা হয়েছিল, কারণ নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছিল।
স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে। নির্বাচনের ফল ঘোষণার জন্য এখন সবার অপেক্ষা।
জানা গেছে, নির্বাচনে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জনমত জরিপ অনুযায়ী, চরম ডানপন্থী রাজনীতিবিদ জর্জে সিমিয়ন প্রথম রাউন্ডে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, নির্বাচনে জয়ী সাবেক ন্যাটোভিরোধী ক্যালিন জর্জেস্কুকে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি।
টিকটক সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা এবং রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগের কারণে তাকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সিমিয়ন ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিরোধী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বের সমালোচনা করেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ আন্দোলনের সঙ্গে নিজেকে সমর্থন করেন। নির্বাচনে সিমিয়নের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হচ্ছে দুই মধ্যপন্থী প্রার্থীকে।
এদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক সিনেটর ক্রিন আন্তোনেস্কু এবং বুখারেস্টের মেয়র নিকুসোর ড্যান। এই দুই প্রার্থীই ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ন্যাটো-র প্রতি সমর্থন করেন।
অন্যদিকে, সাবেক বামপন্থী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর পনটা চতুর্থ স্থানে রয়েছেন, যিনি রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদী হিসেবে পরিচিত।
ভোটারদের মধ্যে অনেকে নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একজন ভোটার রয়টার্সকে জানান, তিনি এই সিদ্ধান্তে ‘ক্ষুব্ধ’ এবং ‘অপমানিত’ বোধ করছেন।
রোমানিয়ার প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত হলেও, তিনি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
এছাড়া, তিনি ইইউ এবং ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেন, গুরুত্বপূর্ণ ইইউ ভোটে ভেটো দিতে পারেন এবং প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারক, সরকারি কৌঁসুলি ও গোয়েন্দা প্রধানদের নিয়োগ করেন।
এই নির্বাচনটি মূলত দেশটির ভবিষ্যৎ পররাষ্ট্রনীতি এবং অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইইউ এবং ন্যাটোর সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা