লামিন ইয়ামাল থেকে এমবাপ্পে: ইউরোপের ফুটবল দল গড়ার সম্ভবনা?

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ফুটবল দল: ঐক্যের নতুন দিগন্ত?

খেলা ভালোবাসেন এমন মানুষের সংখ্যা বাংলাদেশেও কম নয়। ক্রিকেট উন্মাদনার পাশাপাশি ফুটবলও আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয়। মাঠ হোক কিংবা টিভির পর্দা, খেলা উপভোগ করতে সবাই ভালোবাসে।

এবার যদি এমন হয়, ইউরোপের দেশগুলো একত্রিত হয়ে একটি ফুটবল দল তৈরি করে, তাহলে কেমন হবে? এই ভাবনা থেকেই মূলত ইইউ’র ফুটবল দল তৈরির আলোচনা।

কল্পনা করুন, মাঠে খেলা চলছে। একদিকে খেলছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দল, যেখানে ফ্রান্সের এমবাপ্পে, স্পেনের রদ্রি, পোল্যান্ডের লেভান্ডোভস্কি, পর্তুগালের রোনালদো, জার্মানির কেউ, ইতালির কেউ – অর্থাৎ ইইউ’র অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর সেরা খেলোয়াড়েরা খেলছেন। এই দলের মূল উদ্দেশ্য হলো খেলাধুলার মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একটি “ইউরোপীয় পরিচয়” তৈরি করা।

এই ধারণা শুধু খেলা বা বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর গভীরে রয়েছে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট।

এই ধারণার মূল সমর্থকেরা মনে করেন, এমন একটি দল তৈরি হলে তা ইইউ-এর দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে। শুধু অর্থনৈতিক বা সামরিক জোট হিসেবে নয়, খেলাধুলার মাধ্যমেও যে একটি মহাদেশকে একত্রিত করা যায়, সেটাই প্রমাণ করা যাবে।

ইউরোপীয় কমিশনার গ্লেন মিকাল্লেফের মতে, “একটি সম্মিলিত ইইউ ফুটবল দল একটি সাধারণ ইউরোপীয় পরিচয় তৈরি করবে। এটি আমাদের ঐক্য ও সংহতিকে শক্তিশালী করবে।”

গ্লেন মিকাল্লেফ

তবে, অনেকের মনে এই বিষয়ে ভিন্নমতও রয়েছে। তাঁদের মতে, ক্লাব ফুটবলের উন্মাদনার মাঝে ইউরোপীয় দল নিয়ে সেই অর্থে আগ্রহ তৈরি করা কঠিন। কারণ, ফুটবলপ্রেমীরা সাধারণত নিজেদের দেশের দলের প্রতিই বেশি আবেগপ্রবণ হন।

তা সত্ত্বেও, খেলাধুলার মাধ্যমে একটি বার্তা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তাঁরা অনুভব করেন।

এই ধারণা নতুন নয়। গলফের রাইডার কাপ এবং টেনিসের লেভার কাপের মতো প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়েরা দলবদ্ধ হয়ে খেলে থাকেন। এই ধরনের টুর্নামেন্টগুলো বিভিন্ন দেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে এবং ঐক্যের অনুভূতি বাড়াতে সাহায্য করে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইইউ’র এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার আরও একটি কারণ রয়েছে। বর্তমানে বিশ্ব ফুটবলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর প্রভাব বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ফুটবলের গুরুত্ব কমে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে।

তাই, খেলাধুলার মাধ্যমে নিজেদের একটি শক্তিশালী পরিচয় তৈরি করার চেষ্টা করছে ইইউ।

অবশ্য, এই ধরনের দল তৈরি করা সহজ নয়। খেলার সময়সূচি তৈরি করা থেকে শুরু করে আরও অনেক ধরনের সমস্যা রয়েছে।

কিন্তু, খেলাধুলার মাধ্যমে যদি সত্যিই ইউরোপীয় পরিচয় তৈরি করার আগ্রহ থাকে, তাহলে এই ধরনের বাধাগুলো অতিক্রম করা যেতে পারে।

যদি এমন একটি দল গঠিত হয়, তবে নিঃসন্দেহে তা ইউরোপের মানুষের মধ্যে একতা ও ভালোবাসার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

হয়তো, অদূর ভবিষ্যতে আমরা দেখব, ইউরোপীয় ইউনিয়ন দল বিশ্বকাপ খেলছে!

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *