ইসরায়েলের বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: ভয়াবহ পরিণতি?

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। রোববার ভোরে চালানো এই হামলায় বিমানবন্দরের ভেতরের একটি রাস্তা ও গাড়ির ক্ষতি হয়েছে, সেইসঙ্গে কিছু সময়ের জন্য বিমান চলাচলও বন্ধ ছিল।

আল জাজিরার যাচাই করা ছবি ও ফুটেজে এমনটা দেখা গেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষেপণাস্ত্রটিকে প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে।

এরপর তারা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আটজন আহত হয়েছেন।

হুতি বিদ্রোহীরা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধ ও অবরোধের প্রতিবাদে তারা এই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের মতে, গত ১৮ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৫২,৪৯৫ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ২ মার্চ থেকে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে অনাহারে মারা গেছে অন্তত ৫৭ জন।

হুতি মুখপাত্র ইয়াহইয়া সারি এক টেলিভিশন ভাষণে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর এখন বিমান চলাচলের জন্য নিরাপদ নয়।

হামলার পর বিমানবন্দরের সব প্রবেশপথ কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং ট্রেনের চলাচলও স্থগিত ছিল। ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, হামলার সময় কেন্দ্রীয় ইসরায়েলে সাইরেন বাজানো হয় এবং অনেককে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে দেখা যায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানবন্দরের ভেতরের একটি সংযোগ সড়কে ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে এবং এর কিছু ধ্বংসাবশেষ পাশের রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়েভ গ্যালান্ট হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যে আমাদের ওপর হামলা চালাবে, আমরা তাকে সাতগুণ বেশি আঘাত করব।

ইরানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত একটি গোষ্ঠীর এই হামলার জন্য ইরানের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ইসরায়েলের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সাবেক যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যাঞ্জ।

তিনি এক সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া পোস্টে বলেন, “ইরান ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ছে এবং এর দায় তাদেরই নিতে হবে।” তবে তিনি এর স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি।

বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা ইয়ার গোলান বলেছেন, “লক্ষ লক্ষ ইসরায়েলি আবারও আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে, গাজায় বন্দী ইসরায়েলিরা মারা যাচ্ছে, জীবনযাত্রার ব্যয় পরিবারগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং রিজার্ভ সেনারা যুদ্ধের বোঝা বহন করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে।”

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালালে এই যুদ্ধ শুরু হয়। হামাসের হামলায় ১,১৩৯ জন নিহত হয়েছিল এবং ২০০ জনের বেশি মানুষকে বন্দী করা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর হামলায়ও হুতিদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার বিষয়টি অব্যাহত রয়েছে।

হুতি নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম জানিয়েছে, রোববার ভোরে ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা হয়েছে। আল-মাসিরাহ টিভি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমানগুলো আল-জাওফ গভর্নরেটের আল-হাজম জেলায় ১০টি এবং মারিব গভর্নরেটে তিনটি হামলা চালিয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *