যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ? লেবার পার্টির প্রভাবশালী নেতা ওয়েস স্ট্রিটিং মনে করেন, সংস্কারপন্থী দল ‘রিফর্ম’ এখন তাঁদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনে দলটির উল্লেখযোগ্য সাফল্যের পর তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।
একইসঙ্গে, জনগণের কাছে লেবার দলকে সময় দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সাম্প্রতিক নির্বাচনে ‘রিফর্ম’ দলের উত্থান ঘটেছে, যা যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দলটির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়া এবং স্থানীয় সরকারগুলোতে তাদের প্রভাব বিস্তারের ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে নতুন হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে।
ওয়েস স্ট্রিটিং বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “রিফর্ম দল অবশ্যই একটি বাস্তব হুমকি এবং আমরা একে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।” তিনি আরও যোগ করেন, “যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে ডানপন্থী দলগুলোর মধ্যে একটি নতুন মেরুকরণ হচ্ছে।”
স্থানীয় নির্বাচনের ফলাফলের পর ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টিও চাপে রয়েছে। দলের শীর্ষ নেতা কেমি ব্যাডেনোচ দলের পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনার শিকার হলেও, তিনি পদত্যাগ করতে রাজি হননি।
তিনি বলেছেন, “আমরা ধীরে ধীরে এবং স্থিতিশীলভাবে কাজ করব।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে এই মুহূর্তে অস্থিরতা বিরাজ করছে। একদিকে, লেবার পার্টি দেশকে পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, অন্যদিকে, রিফর্ম পার্টি পরিবর্তনের নতুন প্রস্তাব নিয়ে এসেছে।
এই পরিস্থিতিতে আগামী নির্বাচনে কে প্রধান বিরোধী দল হবে, তা বলা কঠিন। তবে, ওয়েস স্ট্রিটিং মনে করেন, রিফর্ম দলের নীতিগুলো আরও বেশি আলোচনার দাবি রাখে।
রিফর্ম পার্টির চেয়ারম্যান জিয়া ইউসুফ জানিয়েছেন, তারা স্থানীয় সরকারে তাদের সক্ষমতা প্রমাণ করতে চান। তিনি আরও বলেন, রিফর্ম সরকার গঠন করলে অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের বিতাড়নের পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
এছাড়া, স্থানীয় সরকারগুলোতে বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক খাতে ব্যয় কমানোর কথাও জানান তিনি। বর্তমানে ১০টি কাউন্সিলে রিফর্ম দলের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে এই পরিবর্তন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ছোট দলগুলোর উত্থান এবং ভোটারদের মধ্যে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা উভয় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে দৃশ্যমান।
তবে, যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং দলগুলোর আদর্শগত ভিন্নতা বিবেচনায় নিয়ে এই পরিবর্তনকে বুঝতে হবে।
তথ্যসূত্র: The Guardian