প্রথমবার: সমুদ্র ড্রোন দিয়ে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ধ্বংস করল ইউক্রেন!

ইউক্রেন দাবি করেছে যে তারা প্রথমবারের মতো একটি সমুদ্র-ড্রোনের মাধ্যমে কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার একটি যুদ্ধবিমান, সুখোই-৩০ (Su-30) ভূপাতিত করেছে। ইউক্রেনীয় সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, “এটি বিশ্বে প্রথম ঘটনা যেখানে একটি সামুদ্রিক ড্রোনের মাধ্যমে একটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা হয়েছে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয় বিমানটি “আকাশে বিস্ফোরিত হয়ে আগুনে জ্বলে ওঠে এবং অবশেষে সমুদ্রে পতিত হয়।” ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবার তাদের একটি ইউনিট রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর নভোরোসিয়স্কের কাছে ইউক্রেনীয় ‘মাগুরা’ (Magura) ড্রোন ব্যবহার করে বিমানটি ধ্বংস করে।

নভোরোসিয়স্কে রাশিয়ার কৃষ্ণ সাগর নৌবহরের কিছু অংশ অবশিষ্ট রয়েছে বলেও ইউক্রেন দাবি করেছে। যদিও, সিএনএন স্বাধীনভাবে ইউক্রেনের এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে একজন রুশ সামরিক ব্লগার এই দাবির সমর্থন করেছেন। টেলিগ্রামে তিনি লিখেছেন, “ইউক্রেনীয়রা নভোরোসিয়স্ক এলাকার কাছে তিন ডজনেরও বেশি সমুদ্র-ড্রোন নিয়ে এসেছিল… আমাদের বিমানটিতে আঘাত হানার পর ক্রুরা শত্রু ড্রোন দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে পানিতে পড়ে যায়।”

যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনায় ইউক্রেন রাশিয়াকে মোকাবিলা করার জন্য ক্রমশ ড্রোনের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছে, কারণ রাশিয়ার জনবল ও সামরিক শক্তি অনেক বেশি। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর থেকে এবং ২০২২ সালের আক্রমণের পরে ইউক্রেনের নৌবহর কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

ড্রোনগুলো মস্কোর ব্ল্যাক সি ফ্লিটের গুরুত্বপূর্ণ জাহাজগুলোর বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এগুলি স্টারলিঙ্ক সংযোগের মাধ্যমে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং কৃষ্ণ সাগর পাড়ি দেওয়ার জন্য আগে থেকেই প্রোগ্রাম করা যায়।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন জানিয়েছিল, তারা কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার একটি ক্ষেপণাস্ত্রবাহী জাহাজ ‘ইভানোভেটস’ ডুবিয়ে দিয়েছে। এছাড়া, কিয়েভের জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আঘাত ছিল ২০২২ সালের এপ্রিলে ‘মোস্কভা’র ওপর হামলা, যা যুদ্ধের শুরুতে ইউক্রেনের মনোবল বাড়িয়েছিল।

সিএনএন-এর পক্ষ থেকে ইউক্রেনের একজন ড্রোন পাইলট জানিয়েছেন, এই ড্রোনগুলি সমুদ্রের খোলা স্থানে সহজে দেখা যায় না, ফলে রাশিয়ানদের জন্য সেগুলিকে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *