হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী কর্মী আনা কোওকের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় মানবাধিকার সংগঠনগুলো তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় বিদেশে বসবাসকারী কোনো কর্মীর পরিবারের ওপর আঘাত হানার ঘটনা এই প্রথম।
আনা কোওক বর্তমানে ওয়াশিংটনে বসবাস করেন এবং হংকং ডেমোক্রেসি কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। হংকং পুলিশ তার মাথার দাম ১০ লক্ষ হংকং ডলার ঘোষণা করেছে।
গত ৩০শে এপ্রিল আনা কোওকের ৬৮ বছর বয়সী বাবা এবং ৩৫ বছর বয়সী ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা আনা কোওককে একটি জীবন বীমা পলিসির বিস্তারিত পরিবর্তন এবং এর অবশিষ্ট অর্থ উত্তোলনে সহায়তা করেছেন।
পুলিশের ভাষ্যমতে, তারা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে কোনো আর্থিক লেনদেনে জড়িত ছিলেন, যা আনা কোওকের সঙ্গে সম্পর্কিত।
আনা কোওকের বাবাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং তার বিচার কার্যক্রম ১৩ই জুন পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, তার ভাইকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তবে তদন্ত এখনো চলছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের চীন বিষয়ক গবেষক ইয়ালকুন উলুয়োল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, “চীনা সরকার হংকংয়ের শান্তিপূর্ণ কর্মীদের পরিবারের ওপর নিপীড়নমূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছে। হংকং কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে আনা কোওকের বাবাকে মুক্তি দিতে হবে এবং কর্মীদের পরিবারকে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা চায়নাএইড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “এটি নির্বাসিত কর্মীদের পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের একটি গভীর উদ্বেগজনক দৃষ্টান্ত। এর মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য করে ভিন্নমত দমন করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা মৌলিক মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের প্রতি চরম অবজ্ঞা।”
এর আগে, হংকং পুলিশ নির্বাসিত কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। টনি চুং, ফ্রান্সেস হুই এবং কারমেন লাউয়ের পরিবারের সদস্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।
তাদের প্রতিবেশী এবং পরিচিতদের কাছেও তাদের সম্পর্কে তথ্য চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
আনা কোওকের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই প্রথম তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে, আনা কোওকের বাবার সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
হংকং পুলিশ এবং হংকং ডেমোক্রেসি কাউন্সিল এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। আনা কোওকের সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান