ফুসফুসের স্বাস্থ্য: বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের করনীয়। আজকের দিনে, যখন ঢাকার বাতাস যেন এক নীরব ঘাতক, ফুসফুসের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা জরুরি।
দূষিত বাতাস, ধূমপান, আর নানা ধরনের শ্বাসকষ্টের সমস্যা—এসব থেকে বাঁচতে হলে ফুসফুসের যত্ন নেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই হয়তো জানেন না, সুস্থ জীবনের জন্য ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কতখানি জরুরি।
আসুন, প্রথমে বুঝি ফুসফুসের কাজটা কী। ফুসফুস হলো আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার প্রধান অঙ্গ। এটি বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করে।
প্রতিদিন আমরা প্রায় ২০,০০০ বার শ্বাস-প্রশ্বাস নিই। সুস্থ ফুসফুস আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষকে সচল রাখতে সাহায্য করে।
কিন্তু কিভাবে বুঝবেন আপনার ফুসফুস ভালো আছে কিনা? কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে যা দেখে আপনি ধারণা করতে পারেন। যেমন, একটানা কয়েক ব্লক পথ হাঁটা বা কয়েক তলা সিঁড়ি ভাঙতে যদি হাঁপিয়ে না ওঠেন, সহজে ক্লান্ত না হয়ে পড়েন, বুকে ব্যথা অনুভব না করেন, নিয়মিত কাশি বা কফের সমস্যা না থাকে, তাহলে আপনার ফুসফুস সম্ভবত ভালো আছে।
এছাড়া, পায়ের পাতা ফোলা বা নখের ডগা বাঁকা হয়ে যাওয়া ফুসফুসের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। এমন কোনো লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
ধূমপান ফুসফুসের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর একটি। তবে শুধু ধূমপায়ী হলেই যে ফুসফুসের সমস্যা হবে, তা নয়। প্যাসিভ স্মোকিং বা অন্যের ধূমপানের ধোঁয়া থেকেও ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া, বায়ুদূষণও একটি বড় সমস্যা।
বিশেষ করে ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে বায়ুদূষণের মাত্রা অনেক বেশি।
তাহলে, ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কী করবেন?
- বায়ুদূষণ থেকে বাঁচুন: ঢাকার মতো শহরে বায়ুদূষণ একটি বড় সমস্যা। বাইরে বের হওয়ার আগে বায়ুমান সূচক (Air Quality Index) দেখে নিন। দূষণের মাত্রা বেশি থাকলে বাইরে বের হওয়া এড়িয়ে চলুন। একান্ত প্রয়োজন হলে এন-৯৫ মাস্ক ব্যবহার করুন। এছাড়া, যানজটপূর্ণ রাস্তা এবং কারখানার কাছাকাছি যাওয়াও এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
- ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখুন: ঘরের ভেতরের বাতাসও অনেক সময় দূষিত থাকে। ঘর নিয়মিত পরিষ্কার করুন, ধুলো ঝাড়ুন এবং ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করুন। ঘরের বাতাস চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখুন। মোমবাতি, ধূপকাঠি বা এয়ার ফ্রেশনারের ব্যবহার কমান।
- ব্যায়াম করুন: নিয়মিত ব্যায়াম ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। দৌড়ানো, হাঁটা বা সাঁতারের মতো ব্যায়াম ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামও করতে পারেন, যেমন—ডায়াফ্রাম্যাটিক শ্বাস-প্রশ্বাস (Belly breathing)।
- চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: ফুসফুসের কোনো সমস্যা হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। প্রয়োজন অনুযায়ী, চিকিৎসক শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা ইনস্পিরেটরি মাসল ট্রেনিংয়ের (IMT) পরামর্শ দিতে পারেন।
শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসের অন্য কোনো সমস্যা হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। নিজের ফুসফুসের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন।
তথ্য সূত্র: The Guardian
 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
				
			 
				
			 
				
			 
				
			