জীবন বদলে দেওয়া: সিনেমা মুক্তির পর হাঁটা পথে মানুষের ঢল?

ব্রিটিশ চলচ্চিত্র ‘দ্য সল্ট পাথ’ : পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে প্রস্তুত ইংল্যান্ডের উপকূলীয় পথ।

পর্যটকদের কাছে প্রকৃতির অনবদ্য সৌন্দর্য সবসময়ই একটি বিশেষ আকর্ষণ। আর এবার ব্রিটেনের একটি চলচ্চিত্র, ‘দ্য সল্ট পাথ’, সেই আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দিতে চলেছে। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পর দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের উপকূলীয় অঞ্চলে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই সিনেমার মূল গল্পটি একজন দম্পতির, যারা তাদের ঘর হারানোর পর ৬৩০ মাইল দীর্ঘ সাউথ ওয়েস্ট কোস্ট পাথে হেঁটে শান্তি খুঁজে পেয়েছিলেন।

গিলিয়ান অ্যান্ডারসন এবং জেসন আইজ্যাকস অভিনীত এই সিনেমাটি রেয়নর উইনের লেখা একই নামের একটি বইয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। সিনেমায় দেখা যাবে, কীভাবে রেইনর এবং তাঁর স্বামী মথ তাঁদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর এই পথে হাঁটা শুরু করেন এবং জীবনের নতুন অর্থ খুঁজে পান।

সিনেমার গল্প অনুযায়ী, এই পথ তাদের মানসিক শান্তির ঠিকানা হয়ে ওঠে। সিনেমার মুক্তি উপলক্ষ্যে এরই মধ্যে কর্নওয়ালের নিউকুইয়ের লাইটহাউস সিনেমা হলে একটি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, সিনেমার সাফল্যের পর আরও অনেক পর্যটক এই পথ ভ্রমণে উৎসাহিত হবেন।

ইংল্যান্ডের এই উপকূলীয় পথটি সোমারসেট, ডেভন, কর্নওয়াল এবং ডরসেটের সমুদ্রের ধার ঘেঁষে বিস্তৃত। যারা ট্রেকিং ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি একটি অসাধারণ গন্তব্য।

কেউ এখানে আসেন প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে, কেউ বা বন্ধু বা একাকী সময় কাটাতে এই পথ বেছে নেন। আবার অনেকে আছেন, যারা এই পথকে সমস্যা থেকে পালিয়ে বাঁচার একটা উপায় হিসেবে দেখেন।

পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা মনে করছেন, এই সিনেমার কারণে পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। ‘ভিজিট কর্নওয়াল’-এর চেয়ারম্যান জোন হায়াত জানিয়েছেন, সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে এই পথ নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে।

নেদারল্যান্ডস থেকে আসা কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিও সিনেমার প্রিমিয়ারের সময় এই স্থানটি ঘুরে গিয়েছেন।

তবে, এই পথের রক্ষণাবেক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতি বছর এই পথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং এর সৌন্দর্য বজায় রাখতে প্রায় ১,৬০০ পাউন্ড খরচ হয়।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশে ভাঙন দেখা যাচ্ছে, যা এই পথের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ঝড়ের কারণে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং মাঝে মাঝেই তা মেরামতের প্রয়োজন হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিনেমা উপকূলীয় পথ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াবে। একইসঙ্গে, পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কেও এটি নতুন করে ভাবতে সাহায্য করবে।

এই পথ শুধু ভ্রমণের জায়গা নয়, এটি প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের আত্মিক যোগের একটি মাধ্যম।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *