রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পুনরায় প্রথম রাউন্ডে অপ্রত্যাশিত জয়লাভ করেছেন জর্জ সিমিয়ন, যিনি কিনা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ (MAGA) আন্দোলনের সমর্থক হিসাবে পরিচিত। তার এই বিজয় দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ন্যাটোর সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে জল্পনা।
আগামী ১৮ মে অনুষ্ঠিতব্য রানঅফ নির্বাচনে সিমিয়নের প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন একজন পশ্চিমা-সমর্থক সংস্কারপন্থী প্রার্থী।
৩৮ বছর বয়সী জর্জ সিমিয়ন ‘অ্যালায়েন্স ফর দ্য ইউনিটি অফ রোমানিয়ানস’ (AUR) নামক একটি ডানপন্থী দলের নেতৃত্ব দেন। গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী ছিলেন, তবে সেই নির্বাচন বাতিল করা হয়েছিল।
সিমিয়নের দল পরিবার, জাতি, ধর্ম ও স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলে এবং তাদের সমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। দলের নীতি-আদর্শ একই লিঙ্গের বিবাহ-এর বিরোধী এবং তারা রোমানীয় অর্থোডক্স চার্চের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে।
সিমিয়নের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম মূলত একটি কট্টর anti-establishment বা ক্ষমতাসীন বিরোধী মানসিকতার উপর ভিত্তি করে গঠিত। কোভিড-১৯ মহামারীর সময় তিনি ভ্যাকসিন ও লকডাউনের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন।
সমালোচকরা মনে করেন, সিমিয়নের এই ধরনের অবস্থান ইউরোপীয় স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি স্বরূপ হতে পারে। তিনি রাশিয়া-পন্থী হিসেবেও পরিচিত। তবে সিমিয়ন বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।
সিমিয়নের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট পদ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কারণ তিনি এর আগে বলেছেন, তিনি ইইউ-এর তুলনায় সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষপাতী।
তিনি ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে তার রাজনৈতিক আদর্শের মিল থাকার কথাও উল্লেখ করেছেন।
সিমিয়নের সমালোচকদের মতে, তিনি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান করেন না এবং তার প্রেসিডেন্ট হওয়াটা রোমানিয়া ও ইউরোপের জন্য খারাপ খবর বয়ে আনবে। বুখারেস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্লডু টিউফিস মনে করেন, সিমিয়নের দল সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুত নয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সিমিয়নের উত্থান বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে চলা জাতীয়তাবাদী প্রবণতার একটি উদাহরণ। এখন দেখার বিষয়, রানঅফ নির্বাচনে ভোটাররা কাকে বেছে নেয় এবং রোমানিয়ার ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নেয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস