পুরুষত্ব প্রমাণে চোখের পাপড়ি কামানো: নতুন ফ্যাশন নাকি স্বাস্থ্য ঝুঁকি?
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আজকাল বিভিন্ন ধরণের উদ্ভট ফ্যাশনের জন্ম হচ্ছে, যা অনেক সময় আমাদের সুস্থ জীবনযাত্রার পরিপন্থী। সম্প্রতি এমনই একটি অদ্ভুতুড়ে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যেখানে কিছু পুরুষ নিজেদের পুরুষালি প্রমাণ করতে চোখের পাপড়ি কামানোর দিকে ঝুঁকছেন। টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মে এর প্রচার বিশেষভাবে চোখে পড়ছে, যা তুরস্ক থেকে নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
আসলে, দীর্ঘ চোখের পাপড়িকে অনেক সময় নারীত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। আর এই ধারণা থেকেই সম্ভবত অনেকে নিজেদের আরও “পুরুষালি” দেখাতে এই পথে হাঁটছেন। তাদের ধারণা, চোখের পাপড়ি কামিয়ে ফেললে তারা আরও “পুরুষ” হিসেবে পরিচিত হবেন।
কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, চোখের পাপড়ি কামানো মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। চোখের পাপড়ি আমাদের চোখের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি বাইরের ধুলোবালি, বৃষ্টির জল এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র কণা থেকে চোখকে রক্ষা করে। পাপড়িগুলি চোখের কাছাকাছি কিছু এলে সংকেত পাঠায়, যা চোখের পলক ফেলতে সাহায্য করে। ফলে চোখের সুরক্ষায় এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। পাপড়ি কামিয়ে ফেললে চোখের নানা ধরনের সংক্রমণ, প্রদাহ এমনকি দৃষ্টিশক্তির সমস্যাও হতে পারে। এই ধরনের ফ্যাশন অনুসরণ করলে চোখের স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের “পুরুষালি” দেখানোর চেষ্টা আসলে এক ধরনের মানসিক দুর্বলতা থেকেই আসে। সমাজে পুরুষত্ব নিয়ে প্রচলিত ধারণাই এর মূল কারণ। দীর্ঘকাল ধরে নারীদের উপর সৌন্দর্য এবং ভালো থাকার যে চাপ তৈরি করা হয়েছে, পুরুষদের মধ্যেও এখন সেই ধরনের প্রবণতা বাড়ছে। শারীরিক গঠন পরিবর্তনের মাধ্যমে নিজেদের আরও আকর্ষণীয় করে তোলার এই প্রবণতা আসলে এক ধরনের মানসিক অস্থিরতারই বহিঃপ্রকাশ।
সুতরাং, চোখের পাপড়ি কামানো হয়তো সাময়িকভাবে “পুরুষালি” দেখাতে পারে, তবে এর স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেক। ফ্যাশনের নামে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয়, যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান