যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি এবং ইউক্রেন প্রশ্নে দ্বিধাগ্রস্ততার তীব্র সমালোচনা করেছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পেন্স বলেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি “মূল্যের ঝাঁকুনি” তৈরি করবে এবং এর ফলে পণ্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
এছাড়াও, তিনি ইউক্রেনকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের “দোদুল্যমান” মনোভাবের সমালোচনা করেন।
পেন্সের মতে, ট্রাম্পের শুল্কনীতি আমেরিকান জনগণের জন্য লাভজনক হবে না। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে, যা ভোক্তা এবং সামগ্রিকভাবে মার্কিন অর্থনীতির ক্ষতি করবে।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকেও স্বীকার করা হয়েছে যে, শুল্কের কারণে অর্থনীতিতে মূল্যবৃদ্ধি এবং পণ্যের স্বল্পতা দেখা যেতে পারে। পেন্সের মতে, খেলনার দাম বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলো সাধারণ আমেরিকানদের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করবে এবং তারা এই নীতির পরিবর্তন চাইবে।
সাক্ষাৎকারে পেন্স ইউক্রেন প্রসঙ্গে ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করে বলেন, রাশিয়া আসলে শান্তি চায় না, বরং ইউক্রেনকে চায়। তিনি উল্লেখ করেন, কিয়েভকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নির্দেশ দেওয়ার আগে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশংসা করেছিলেন।
পেন্সের মতে, ইউক্রেনকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের দ্বিধাগ্রস্ততা রাশিয়াকে আরও উৎসাহিত করেছে।
পেন্সের এই মন্তব্যগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন তিনি ৬ জানুয়ারী, ২০২১-এ ক্যাপিটলে দাঙ্গার ঘটনার পর ট্রাম্পের চাপ সত্ত্বেও নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করতে অস্বীকার করার জন্য “জন এফ কেনেডি প্রোফাইল ইন কারেজ অ্যাওয়ার্ড” গ্রহণ করেছেন।
এই ঘটনার পর ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের সময় প্রায় ১,৬০০ দাঙ্গাকারীকে ক্ষমা করার সিদ্ধান্তকেও তিনি ভুল বার্তা দেওয়া হিসেবে উল্লেখ করেন।
এছাড়াও, পেন্স কানাডার সঙ্গে ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্ক আরোপের তীব্র সমালোচনা করেন এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে প্রতিটি যুদ্ধে কানাডার সেনারা যুক্তরাষ্ট্রের পাশে লড়েছেন এবং জীবন দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের এই বাণিজ্য সিদ্ধান্তগুলো বিশ্ব অর্থনীতিতে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো রপ্তানি-নির্ভর দেশগুলোর উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান