কুলার শেকারের ‘গোবিন্দ’: এক গানেই বিশ্বজয়, ভক্তদের প্রতিক্রিয়া!

কুলার শেকার: ‘গোবিন্দা’ গানের জন্মকথা

নব্বইয়ের দশকে ‘কুলার শেকার’ ব্যান্ড তাদের ‘গোবিন্দা’ গানটির মাধ্যমে সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে। গানটি তৈরি হয়েছিল সংস্কৃত ভাষায়, যা ছিল পশ্চিমা সঙ্গীতের জগতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ব্যান্ডের সদস্যরা গানটি তৈরি হওয়ার পেছনের গল্প এবং এর প্রভাব সম্পর্কে কথা বলেছেন।

কুলার শেকারের প্রধান শিল্পী ক্রিস্পিয়ান মিলস জানান, গানটি তাদের নিজস্ব সৃষ্টি নয়, বরং এটি সনাতন একটি মন্ত্র। প্রথমবার তিনি গানটি শোনেন ছোটবেলায় একটি কৃষ্ণ মন্দিরে।

পরবর্তীতে জর্জ হ্যারিসনের ‘দ্য রাধা কৃষ্ণ টেম্পল’ অ্যালবামে গানটি শুনে এর প্রেমে পড়েন তিনি। ব্যান্ডের সদস্যরা লন্ডনের সুইস কটেজে একসঙ্গে থাকতেন এবং সবসময় এই গানটি শুনতেন। এর ফলেই গানটির প্রতি তাদের গভীর আকর্ষণ তৈরি হয়।

১৯৯৩ সালে গ্লাস্টনবারি উৎসবে প্রথমবার তারা ‘গোবিন্দা’ পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে তারা হরেকৃষ্ণ ভক্তদের একটি তাঁবুতে বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করছিলেন, যা তাদের কাছে উপযুক্ত মনে হয়েছিল।

মিলস আরও বলেন, গানটি কেবল একটি গান নয়, বরং এটি হাজার বছরের ঐতিহ্য এবং আধ্যাত্মিকতার একটি পথ। গানটি এখনো তাদের বিস্মিত করে, কারণ এটি সবসময় নতুন রূপে আবির্ভূত হয়।

ব্যান্ডের বাজিস্ট আলনজা বিভান জানান, তারা সবসময় ৬০ ও ৭০ দশকের হিপ্পি ঘরানার গান পছন্দ করতেন। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং প্রাচ্য দর্শনেও তাদের গভীর আগ্রহ ছিল।

তাদের এক বন্ধু, যিনি তাদের সাথে বাঙালি সঙ্গীতশিল্পীদের পরিচয় করিয়ে দেন, তাদের মাধ্যমেই ‘গোবিন্দা’ গানের সৃষ্টি হয়। বিভান আরও বলেন গানটি রেডিওতে প্রচার হওয়ার পর অনেকে একে ভিন্নভাবে নিয়েছিল।

এমনকি অনেকে গানের কথাগুলো “গো ক্যাশ ইয়োর গিরো গিরো” (Go cash your giro giro) বলেও চিৎকার করত। তবে, গানটি সবসময় তাদের কাছে নতুন এবং আকর্ষণীয় মনে হয়।

‘গোবিন্দা’ গানের সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মিলস বলেন, “গানটি লাইভ পরিবেশনার সময় সবসময় শ্রোতাদের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি তৈরি করত। একবার ব্ল্যাকবার্নে কনসার্টের সময় ২৫০০ মানুষের সামনে গানটি পরিবেশন করার সময় তিনি অনুভব করেন, যেন এই গানের ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

গানটি যেন নিজের পথ খুঁজে নিয়েছে।”

গানটির প্রযোজক ছিলেন জন লেকি, যিনি স্টোন রোজেস-এর প্রথম অ্যালবাম তৈরি করেছিলেন। ‘গোবিন্দা’ গানের জন্য তারা ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় বাদ্যযন্ত্র যেমন তম্বুরা এবং তবলা ব্যবহার করেছিলেন।

বর্তমানে, কুলার শেকার তাদের আসন্ন কনসার্টগুলোতে গানটি পরিবেশন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ভক্তদের জন্য এটি একটি বিশেষ আকর্ষণ হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *