কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২৬।
জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তে ভয়াবহ এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন ভারতীয় পর্যটক। গত ২২শে এপ্রিল, পাহলগামের কাছে বাইসারান প্রান্তরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত বন্দুকধারীরা অতর্কিতভাবে পর্যটকদের উপর হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর আহত হন আরও ১৭ জন। তাৎক্ষণিকভাবে হামলাকারীরা ঘন জঙ্গলের মধ্যে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং হতাহতদের উদ্ধার করে।
এই হামলার জন্য ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানের মদতেই এই সন্ত্রাসী হামলা সংঘটিত হয়েছে। যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ঘটনার পর ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সময়ে পর্যটকদের আগমন বেড়ে যাওয়ায় সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে বলে দাবি করা হচ্ছিল। কিন্তু এই হামলার ফলে সেই দাবি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার দীর্ঘদিন ধরেই কাশ্মীর উপত্যকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই হামলা প্রমাণ করে যে, সেখানকার পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক নয়।
হামলার পর ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। বিশ্লেষকদের মতে, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের শত্রুতার কারণে এমন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা এখনো অনেক।
সাবেক ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা অবিনাশ মহানানয় এই বিষয়ে বলেন, “আমরা সম্ভবত নিজেদের তৈরি করা ধারণার শিকার হয়েছিলাম যে কাশ্মীরে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
হামলার পর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং সহ অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে জরুরি বৈঠকে বসেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হামলা সম্ভবত প্রতিশোধমূলক ছিল। কারণ, এর আগে পাকিস্তানে বালুচ বিদ্রোহীরা একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের উপর হামলা চালিয়েছিল, যেখানে ২৫ জন নিহত হয়েছিল। ভারত সরকার সেই ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছিল।
এই ঘটনার পর ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা কাশ্মীরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করেছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল কাশ্মীর উপত্যকায় অস্থিরতা তৈরি করা এবং পর্যটকদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করা।
এই ঘটনার জেরে ভারত সরকার কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, এখন সেদিকেই সবার দৃষ্টি।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস