শিরোনাম: ট্যাক্স ফাঁকি: ধনী আমেরিকানদের ৪ বিলিয়ন ডলার লুকাতে সুইস ব্যাংকের জরিমানা
সুইস ব্যাংকিং খাতের একটি বড় নাম ক্রেডিট সুইস, যারা এখন ইউবিএস-এর অংশ, তাদের একটি ইউনিটকে বিপুল পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ধনী আমেরিকান নাগরিকদের ট্যাক্স ফাঁকি দিতে তারা সাহায্য করেছে।
এই অপরাধের জন্য ক্রেডিট সুইস সার্ভিসেসকে (Credit Suisse Services) দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং প্রায় ৫১০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার সমান (১ ডলার = ১১০ টাকা ধরে)।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগীয় সূত্র মতে, ক্রেডিট সুইস সিঙ্গাপুরে কিছু হিসাব খুলেছিল, যেখানে আমেরিকান করদাতারা তাদের অর্থ জমা রাখতেন, যাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের কর এবং রিপোর্টিংয়ের নিয়মকানুন এড়িয়ে যেতে পারেন। ব্যাংকটির কর্মীরা এক্ষেত্রে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিল।
তারা ভুয়া হিসাব তৈরি করে এবং অনুদানের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে হাজার কোটি ডলার হিসাব বহির্ভূত রাখতে সহায়তা করেছে।
এই ঘটনার আগে, ২০১৪ সালে ক্রেডিট সুইস ব্যাংকটি একই ধরনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। সে সময় ব্যাংকটিকে ২৫০ কোটি ডলার জরিমানা করা হয়েছিল।
সেই সময়েও তারা আমেরিকান নাগরিকদের ট্যাক্স ফাঁকি দিতে সাহায্য করার অভিযোগ স্বীকার করেছিল। এই পুরনো চুক্তির শর্ত ভেঙে পুনরায় একই ধরনের কাজ করায় এবার তাদের আরও বড় শাস্তির সম্মুখীন হতে হলো।
২০২৩ সালে ক্রেডিট সুইসকে কিনে নেয় ইউবিএস (UBS)। ইউবিএস জানিয়েছে, এই কেলেঙ্কারিতে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না।
তাদের মতে, ক্রেডিট সুইস-এর এই বেআইনি কাজগুলো তাদের অধিগ্রহণের আগে সংঘটিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে করা নতুন একটি চুক্তিতে ক্রেডিট সুইস সার্ভিসেস এবং ইউবিএস উভয়কেই সহযোগিতা করতে হবে। ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র-সংশ্লিষ্ট কোনো হিসাবের ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া গেলে, তা কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্থিক অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই ঘটনার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কীভাবে ধনী ব্যক্তিরা কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেন, সে বিষয়ে একটি ধারণা পাওয়া যায়। একইসঙ্গে, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তাও এই ঘটনা তুলে ধরে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন