যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক, যা দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে পরিচিত, সম্ভবত চলতি সপ্তাহে সুদের হার অপরিবর্তিত রাখবে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপ সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্ত আসতে চলেছে।
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমানোর আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন।
ফেডারেল রিজার্ভের এই সিদ্ধান্তের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
মূলত, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যাংকটি ২০২০ ও ২০২৩ সালে সুদের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।
বর্তমানে সুদের হার প্রায় ৪.৩ শতাংশে রয়েছে।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে, মূল্যস্ফীতি এখন স্থিতিশীল হয়েছে এবং সুদের হার কমানো যেতে পারে।
অন্যদিকে, ফেডারেল রিজার্ভ মনে করছে, ট্রাম্পের সম্ভাব্য শুল্ক নীতি, যা আমদানি পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধি করবে, তার কারণে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে সুদের হার কমালে তা মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
তাছাড়া, ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েল-এর উপর ট্রাম্পের চাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কারণ সুদের হার কমালে তা রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকারের মতো দেখাবে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর বিষয়ে বেশ সতর্ক থাকবে।
কারণ অতীতে, বিশেষ করে ২০২১ সালে, সরবরাহ জটিলতার কারণে যখন জিনিসপত্রের দাম বেড়েছিল, তখন ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারকদের কিছু ভুল পদক্ষেপ ছিল।
এবার তারা সেই ভুল করতে চাইছে না।
এদিকে, সাবেক ফেডারেল রিজার্ভ গভর্নর কেভিন ওয়ার্শ মনে করেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় ফেডারেল রিজার্ভ বর্তমানে বেশি সমালোচনার শিকার হচ্ছে।
সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে বাংলাদেশের কী সম্পর্ক?
ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করতে পারে।
এর মধ্যে বিনিময় হার, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য।
উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রে যদি মূল্যস্ফীতি বাড়ে, তবে এর প্রভাব বাংলাদেশের বাজারেও পড়তে পারে।
তবে, ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত কখন আসবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
কিছু অর্থনীতিবিদ মনে করেন, ব্যাংকটি হয়তো সেপ্টেম্বরের আগে সুদের হার কমানোর কথা ভাববে না।
সবকিছু নির্ভর করছে অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির ওপর।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস