লিভারপুল ছাড়ছেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড, গন্তব্য রিয়াল মাদ্রিদ।
ফুটবল বিশ্বে আবারও একটি বড় পরিবর্তনের সুর। ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলের হয়ে মাঠ মাতানো তারকা ফুটবলার ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের দল ছাড়ার গুঞ্জন এখন তুঙ্গে। শোনা যাচ্ছে, তিনি যোগ দিতে পারেন স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে।
এই খবরে হতাশ তাঁর কোটি কোটি ভক্ত, কারণ ছোটবেলা থেকেই এই ক্লাবের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখতেন তিনি।
আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের ফুটবল জীবনের শুরুটা হয়েছিল লিভারপুলের একাডেমিতে। ছয় বছর বয়সে ক্লাবে নাম লেখানো এই রাইট ব্যাক গত নয় বছর ধরে দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন।
মাঝমাঠ এবং রক্ষণভাগে তাঁর অসাধারণ দক্ষতা বহুবার দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাঁর নিখুঁত পাস, গোল করার ক্ষমতা এবং আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের সঙ্গে বোঝাপড়া তাকে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ে পরিণত করেছে।
২০১৮ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে আবারও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতেন তিনি।
প্রিমিয়ার লিগেও তাঁর রয়েছে একাধিক রেকর্ড। ২০১৮-১৯ মৌসুমে তিনি ১২টি এবং ২০২১-২২ মৌসুমে ১২টি এসিস্ট করে রেকর্ড গড়েন।
খেলোয়াড় হিসেবে তিনি জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ, লিগ কাপ, ক্লাব বিশ্বকাপ, উয়েফা সুপার কাপ ও কমিউনিটি শিল্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিরোপা।
আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের এই বিদায় লিভারপুল সমর্থকদের জন্য এক বিশাল ধাক্কা। কারণ, তিনি শুধু একজন খেলোয়াড় ছিলেন না, বরং ছিলেন সমর্থকদের হৃদয়ের খুব কাছের একজন।
তাঁর খেলা, দলের প্রতি ভালোবাসা, সবকিছুই সমর্থকদের মুগ্ধ করত। ক্লাব কর্তৃপক্ষও চেয়েছিলেন তাঁকে ধরে রাখতে। তারা নতুন চুক্তিও অফার করেছিল, যা তাঁর যোগ্যতার প্রতি সম্মান জানিয়েই করা হয়েছিল।
কিন্তু খেলোয়াড় হিসেবে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চাওয়া এবং ব্যালন ডি’অর জেতার স্বপ্ন সম্ভবত তাঁকে অন্য পথে চালিত করছে।
রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিলে আলেকজান্ডার-আর্নল্ড নতুন একটি সংস্কৃতি ও পরিবেশে খেলার সুযোগ পাবেন। সেখানকার তারকাখচিত জীবনযাত্রা এবং নতুন চ্যালেঞ্জগুলো তাঁর ক্যারিয়ারকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
তবে, তাঁর এই দলত্যাগ লিভারপুল সমর্থকদের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করবে, তা বলাই বাহুল্য।
আর্নোাল্ডের বিদায় লিভারপুলের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তবে ফুটবল একটি দলগত খেলা।
তাই, দল হিসেবে লিভারপুলকে এখন নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে এবং তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় মনোযোগ দিতে হবে। আগামীতে দেখা যাক, এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে লিভারপুল কতটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান