মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, বিদেশি সিনেমাগুলোর উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে হলিউডের সিনেমা নির্মাণ এবং বিশ্ব চলচ্চিত্র বাজারে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খবর অনুযায়ী, এই প্রস্তাবের একদিন আগেই অভিনেতা জন ভোইট-এর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। ভোইট সিনেমা প্রযোজনা আমেরিকায় ফিরিয়ে আনার জন্য কিছু প্রস্তাব পেশ করেন, যেখানে সীমিত আকারে শুল্কের ব্যবহারের কথা বলা হয়েছিল।
ভোইট-এর পরিকল্পনা ছিল, ফেডারেল ট্যাক্স প্রণোদনা, ট্যাক্স কোডের পরিবর্তন, অন্যান্য দেশের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনা চুক্তি এবং সিনেমা হল ও প্রযোজনা সংস্থাগুলোর জন্য অবকাঠামো ভর্তুকি দেওয়া। তবে ট্রাম্পের এই আকস্মিক ঘোষণা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র জগতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
কারণ, বর্তমানে হলিউডের অনেক সিনেমার শুটিং হয় কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, হাঙ্গেরি, ইতালি এবং স্পেনের মতো দেশগুলোতে, যা স্থানীয় ট্যাক্স সুবিধা, দক্ষ কর্মী এবং সুন্দর লোকেশনের কারণে প্রযোজকদের কাছে আকর্ষণীয়।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিনেমা নির্মাণের খরচ আরও বেড়ে যেতে পারে। কারণ, বিদেশি সিনেমার উপর এত বেশি শুল্ক আরোপ করা হলে, নির্মাতারা আমেরিকায় সিনেমা বানানোর আগ্রহ হারাতে পারেন। এর ফলে, হলিউডের বাইরে বিভিন্ন দেশে সিনেমার বাজার আরও প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যদিও হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বিদেশি সিনেমার উপর শুল্ক আরোপের বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে, এই ঘোষণার পর চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
শ্রমিক সংগঠনগুলো যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নতির জন্য নীতি গ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছে। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো, যেখানে মার্কিন সিনেমার শুটিং হয়, তারা এই সিদ্ধান্তের কারণে উদ্বেগে রয়েছে। কারণ, এমনটা হলে তাদের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রবণতা নতুন নয়। হলিউডের অনেক সিনেমা নির্মাতাই দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দেশে শুটিং করেন। উদাহরণস্বরূপ, গত এক দশকে লস অ্যাঞ্জেলেসে চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিমাণ প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে। এর কারণ হিসেবে এখানকার উচ্চ খরচ এবং অন্যান্য রাজ্যের ট্যাক্স সুবিধাগুলোও দায়ী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই প্রস্তাব যদি কার্যকর হয়, তবে তা বিশ্ব চলচ্চিত্র বাজারে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। তবে, এর প্রভাব কেমন হবে, তা এখনই বলা কঠিন। বিষয়টি এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান