গ্রিনল্যান্ড নিয়ে ট্রাম্পের চাঞ্চল্যকর মন্তব্য! চীনকে রুখতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশল?

শিরোনাম: গ্রিনল্যান্ড নিয়ে ট্রাম্পের উদ্বেগ: চীনকে রুখতে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড নিয়ে আগ্রহ এখনো অব্যাহত। তিনি প্রায়ই বলে থাকেন যে চীন এবং রাশিয়ার হাত থেকে এই দ্বীপকে রক্ষা করতে হবে।

কিন্তু তার এই উদ্বেগের কতটা ভিত্তি আছে? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই জরুরি এবং এর আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে এই দ্বীপের প্রয়োজন।

আর্টিক অঞ্চলে গ্রিনল্যান্ডের অবস্থান। ডেনমার্কের অধীনে থাকা এই স্বশাসিত অঞ্চলটি একদিকে যেমন বিশাল, তেমনি লোকসংখ্যায় খুবই কম।

বিশ্লেষকদের মতে, গ্রিনল্যান্ডের কৌশলগত গুরুত্ব অনেক। একদিকে যেমন এখানে রয়েছে বিপুল খনিজ সম্পদের সম্ভাবনা, তেমনি আর্কটিক অঞ্চলের সমুদ্র পথগুলো বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

এই কারণে রাশিয়া ও চীনের মতো দেশগুলো এখানে তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

তবে, ট্রাম্পের এই উদ্বেগের সঙ্গে বাস্তবতার কতটা মিল রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রিনল্যান্ডে চীনের উপস্থিতি মূলত অর্থনৈতিক, সামরিক নয়।

যদিও তারা খনিজ সম্পদ আহরণের চেষ্টা করেছে এবং সেখানে বিমানবন্দর বানানোরও প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু স্থানীয় সরকার ও ডেনমার্কের আপত্তির কারণে সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি।

বর্তমানে, গ্রিনল্যান্ডে চীনের উল্লেখযোগ্য কোনো উপস্থিতি নেই বললেই চলে।

অন্যদিকে, রাশিয়া আর্কটিক অঞ্চলে সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে। তাদের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন নিয়মিত টহল দিচ্ছে।

চীনও আলাস্কার কাছে নৌ কার্যক্রম বাড়িয়েছে। যদিও গ্রিনল্যান্ডের আশেপাশে এখন পর্যন্ত কোনো চীনা যুদ্ধজাহাজ দেখা যায়নি।

ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, গ্রিনল্যান্ডে রাশিয়ার পাশাপাশি চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগের কারণ। কারণ, গ্রিনল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, যা ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্তকরণ ও মহাকাশ পর্যবেক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তবে, ডেনমার্ক সরকার এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।

চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের নিয়মকানুন মেনে চলে।

তারা আর্কটিক অঞ্চলে গবেষণা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং বাণিজ্য প্রসারের ওপর জোর দিচ্ছে।

চীনের ভাষ্যমতে, তারা পারস্পরিক সম্মান, সহযোগিতা এবং সকলের জন্য লাভজনক সম্পর্ক চায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন দীর্ঘদিন ধরেই গ্রিনল্যান্ডে তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। তারা খনিজ সম্পদ আহরণ করতে চাইছে এবং আর্কটিক অঞ্চলে নিজেদের বাণিজ্য পথ তৈরি করতে চাইছে।

তবে, গ্রিনল্যান্ডে চীনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এখনো সীমিত।

গ্রিনল্যান্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই আগ্রহ নতুন নয়।

অতীতেও যুক্তরাষ্ট্র এই দ্বীপ কেনার চেষ্টা করেছিল। বর্তমানে, গ্রিনল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে এবং তারা ডেনমার্কের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে চায়।

গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ওপর।

তবে, ট্রাম্পের উদ্বেগের কারণ এবং এর বাস্তব ভিত্তি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *