জার্মানিতে বড় ধাক্কা! চ্যান্সেলর নির্বাচনে মেরজের অপ্রত্যাশিত হার!

জার্মানিতে চ্যান্সেলর নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে অপ্রত্যাশিতভাবে পরাজিত হয়েছেন ফ্রিডরিখ মেরৎস। জার্মানির ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি, যেখানে কোনো প্রার্থী প্রথম রাউন্ডেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন।

দেশটির পার্লামেন্ট, বুন্দেসটাগে (Bundestag) ভোটাভুটিতে এই ফল আসে, যা জার্মানির রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের ধাক্কা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। মেরৎস মধ্য-ডানপন্থী দল সিডিইউ/সিএসইউ জোটের নেতা।

মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ভোটে মেরৎস প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট পাননি। বিশ্লেষকদের মতে, এই ফল মের্তসের জন্য ‘বিপর্যয়’ ডেকে এনেছে।

বুন্দেসটাগে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় এখন জার্মানিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। সাধারণত, জার্মানির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সুনাম রয়েছে।

কিন্তু এই ঘটনার পর এখন অনেকেই শঙ্কিত যে, সরকার গঠনে জটিলতা সৃষ্টি হবে।

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সিডিইউ/সিএসইউ জোট সামান্য ব্যবধানে জয়লাভ করলেও, মেরৎস ব্যক্তিগতভাবে জনগণের মধ্যে খুব একটা জনপ্রিয়তা পাননি। জনমত সমীক্ষায় দেখা গেছে, মাত্র ৩৮ শতাংশ মানুষ চ্যান্সেলর হিসেবে তাকে সমর্থন করেন, যেখানে ৫৬ শতাংশ মনে করেন তিনি এই পদের জন্য উপযুক্ত নন।

সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের (এসপিডি) মধ্যে মেরৎস-এর প্রতি তীব্র অসন্তোষ দেখা যায়। তাদের ৬২ শতাংশই তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

জার্মানিতে সরকার গঠনে এখন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চরম ডানপন্থী দল অল্টারনেটিভ ফর ডয়েচল্যান্ড (এএফডি)-এর সুবিধা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এএফডি-র সহ-নেত্রী অ্যালিস ওয়েডেল মের্তসের পরাজয়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এর মাধ্যমে বর্তমান জোটের দুর্বলতা প্রকাশ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

জার্মান চ্যান্সেলর নির্বাচনে এই অচলাবস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ভবিষ্যৎ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কগুলোর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। জার্মানি, ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ এবং বিশ্ব রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি।

তাই, দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এখন দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের দিকে নজর রাখতে হবে। মেরৎস যদি দ্বিতীয় রাউন্ডেও জিততে ব্যর্থ হন, তাহলে জার্মানিতে নতুন নির্বাচন হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে, এএফডি-র মতো দলগুলোর উত্থান আরো বাড়তে পারে, যা জার্মানির অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।

জার্মানির এই রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *