গাজায় ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞ: ক্ষুধার্ত মানুষের আহাজারি!

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে, খাদ্য সংকটে মানবিক বিপর্যয়।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ধারাবাহিক হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, গত কয়েক দিনের হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া, অবরুদ্ধ গাজায় দীর্ঘ দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা অবরোধের কারণে খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

সেখানকার ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম খাদ্যভাব, যা মানবিক বিপর্যয় আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

বুধবার (আজ) গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে, জাবালিয়ায় একটি বাড়িতে হামলায় তিনজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। খান ইউনিসে একটি বাড়িতে চালানো হামলায় নিহত হয় আটজন।

দেইর আল-বালাহ শহরে উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নেওয়া একটি তাঁবুতে আঘাত হানলে এক শিশুসহ তিনজন নিহত হয়। বানি সুহেইলা গ্রামে একটি বাড়িতে হামলায় এক দম্পতিও নিহত হয়েছেন।

এর আগে, মঙ্গলবার গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় ৩১ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয় বলে জানা গেছে। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এই তথ্য জানিয়েছে।

গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় জরুরি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে খাদ্য ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গাজায় খাদ্য সংকট এতটাই গুরুতর যে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা (UNRWA) জানিয়েছে, তাদের খাদ্য সরবরাহ প্রায় শেষের দিকে।

সেখানকার একটি উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নেওয়া এক মা জানান, তাদের কাছে খাওয়ার মতো কিছুই নেই, কেবল রুটি ছাড়া।

সংস্থাটি এক বিবৃতিতে অবিলম্বে অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে, মানবিক বিপর্যয় রোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছে তারা।

গাজার স্বাস্থ্যখাতও এই হামলা ও অবরোধের কারণে মারাত্মক সংকটে পড়েছে। হাসপাতালগুলোতে শয্যা প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে এবং জরুরি চিকিৎসা সামগ্রীরও অভাব দেখা দিয়েছে।

এদিকে, বুধবার কাতার ও মিশর এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে একটি চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করছে। উভয় দেশই মানবিক সংকট নিরসনে এবং ব্যাপক যুদ্ধবিরতির পরিবেশ তৈরি করতে চায়।

অন্যদিকে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হলে গাজায় নতুন করে আরও তীব্র সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। তবে, হামাস জানিয়েছে, খাদ্য ও গণহত্যার এই যুদ্ধ চলতে থাকলে কোনো আলোচনার সম্ভাবনা নেই।

হামাসের একজন কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেন, গাজায় যখন ক্ষুধা ও ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, তখন নতুন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার কোনো মানে হয় না।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *