বাড়ি কেনার স্বপ্ন পূরণ! কিস্তি ছাড়াই শুরু, দারুণ সুযোগ!

শিরোনাম: যুক্তরাজ্যের নতুন বন্ধকী: বাড়ি কেনার স্বপ্নে বাংলাদেশের জন্য কি কোনো সুযোগ আছে?

বর্তমান বিশ্বে, বাড়ি কেনা একটি বিশাল বিনিয়োগ। বিশেষ করে প্রথমবারের মতো যারা বাড়ি কিনছেন, তাদের জন্য এই প্রক্রিয়াটি বেশ কঠিন হতে পারে।

বাড়ি কেনার খরচ, নিবন্ধন ফি, এবং আনুষঙ্গিক খরচগুলো অনেক সময় বেশ চাপ সৃষ্টি করে। এই সমস্যা সমাধানে প্রায়ই নতুন নতুন আর্থিক সমাধান নিয়ে আসে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের একটি বিল্ডিং সোসাইটি, স্কিপটন বিল্ডিং সোসাইটি, তাদের গ্রাহকদের জন্য একটি বিশেষ বন্ধকী সুবিধা চালু করেছে যা বর্তমানে বেশ আলোচনায় এসেছে।

স্কিপটন বিল্ডিং সোসাইটির চালু করা এই নতুন বন্ধকী সুবিধার মূল আকর্ষণ হলো, প্রথম তিন মাস গ্রাহকদের কোনো মাসিক কিস্তি পরিশোধ করতে হবে না।

সহজ কথায়, বাড়ি কেনার পর প্রথম তিন মাস পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধের চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এই সুবিধাটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে প্রথমবারের মতো বাড়ি ক্রেতাদের জন্য, যারা নতুন বাড়িতে উঠার পর নানারকম খরচ সামাল দিতে হিমশিম খান।

সাধারণত, নতুন বাড়িতে ওঠার পর ফার্নিচার কেনা, সংস্কার করা অথবা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য অনেক খরচ হয়। স্কিপটনের এই নতুন স্কিমটি মূলত তাদের জন্যই তৈরি করা হয়েছে।

তবে, এই সুবিধাটির কিছু শর্ত আছে। এই স্কিমের অধীনে, প্রথম তিন মাসে কিস্তি পরিশোধ না করলেও, সুদ কিন্তু চালু থাকবে।

অর্থাৎ, সুদ হিসাব করা হবে প্রথম দিন থেকেই এবং তা মূল বন্ধকী ঋণের সাথে যোগ হবে। তাই, এটিকে অনেকটা ‘পরে পরিশোধ করুন’ (buy now, pay later) – এর মত মনে করা যেতে পারে।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে, আপনার বন্ধকী ঋণের পরিমাণ প্রথম থেকেই বাড়বে।

যুক্তরাজ্যে, এই ধরনের বন্ধকী সুবিধার প্রচলন নতুন নয়। এর আগে, ২০১৪ সালে লিডস বিল্ডিং সোসাইটি ‘০%’ সুদের হারে কিছু বন্ধকী ঋণ চালু করেছিল, যেখানে গ্রাহকদের শুরুতে কোনো সুদ দিতে হয়নি।

তবে, মূল ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হতো এবং শুরুতে পরিশোধ না করা সুদ পরবর্তী কিস্তিতে যোগ করা হতো। স্কিপটন বিল্ডিং সোসাইটির এই পদক্ষেপটি সেই ধারারই একটি অংশ, যা যুক্তরাজ্যের প্রথমবার বাড়ি ক্রেতাদের জন্য আর্থিক সুবিধা প্রদানের চেষ্টা করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের স্কিম নতুন বাড়ি ক্রেতাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসে। তবে, এটাও মনে রাখতে হবে যে, সুদ যুক্ত হওয়ার কারণে চূড়ান্ত খরচ কিন্তু বাড়বে।

উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্যের বাজার অনুসারে, নতুন বাড়ি ক্রেতারা সাধারণত বাড়ি কেনার প্রথম তিন মাসে প্রায় ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকার (বাংলাদেশি মুদ্রায়) মত খরচ করেন। এই স্কিমের মাধ্যমে, তারা অন্তত সেই সময়টাতে কিস্তির চাপ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

তাহলে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ধরনের স্কিমের সম্ভাবনা কতটুকু? আমাদের দেশেও বাড়ি কেনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।

এখানেও নতুন বাড়ি ক্রেতাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের আর্থিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যদি গ্রাহকদের জন্য এমন কোনো নমনীয় কিস্তি বা পরিশোধের সুযোগ তৈরি করতে পারে, তাহলে তা নিঃসন্দেহে অনেক সাহায্য করবে।

তবে, এক্ষেত্রে সুদের হার এবং অন্যান্য শর্তগুলো অবশ্যই গ্রাহকদের জন্য সহজলভ্য এবং বোধগম্য হতে হবে। ভবিষ্যতে, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোও সম্ভবত এই ধরনের উদ্ভাবনী বন্ধকী সুবিধা নিয়ে আসবে, যা আমাদের দেশের মানুষের জন্য বাড়ি কেনার স্বপ্নকে আরও সহজ করে তুলবে।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *