ভাইরাল ভিডিও: অফিসের বস বাস্তবে ‘মাইকেল স্কট’, কর্মীদের মন জয়!

ভাইরাল হওয়া একটি টিকটক ভিডিওর সুবাদে বিশ্বজুড়ে কর্মীর চাহিদা বেড়েছে এমন এক ‘আসল জীবনের মাইকেল স্কট’-এর। অফিসের মজাদার মুহূর্তগুলো নিয়ে তৈরি করা ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

ভিডিওটি তৈরি করেছেন জেড হিক্স নামের একজন নারী। তাঁর বস জেফের কিছু কাণ্ডকারখানা ক্যামেরাবন্দী করে তিনি টিকটকে আপলোড করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, জেফ অফিসের ভেতরে বিউটি মাস্ক পরে ঘোরাঘুরি করছেন, বেলুন ফোটাচ্ছেন, হাতে ছোট মাইক্রোফোন নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন এবং এমনকি ভ্যাকসিন নেওয়ার সময় শার্ট খুলে ফেলেন।

এই ধরনের মজার কাণ্ডগুলোর কারণেই অনেকে জেফকে ‘আসল জীবনের মাইকেল স্কট’ বলছেন, যা ‘দ্য অফিস’ নামের জনপ্রিয় মার্কিন টিভি সিরিজের একটি চরিত্রের সঙ্গে তুলনীয়।

ভিডিওটি অনলাইনে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তাতে মন্তব্য আসতে শুরু করে, যা দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়। শুধু হাসাহাসি নয়, বরং জেফের অফিসের পরিবেশ ও তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার ধরনের প্রশংসাও করেছেন অনেকে। জেড জানান, তিনি আগে বেশ কিছু খারাপ কর্মপরিবেশে কাজ করেছেন, কিন্তু জেফ ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন।

তিনি ছিলেন সৃষ্টিশীল, মজাদার এবং একজন ভালো বস।

জেফের এমন কাণ্ডকারখানা একদিনের নয়, বরং বেশ কয়েক বছর ধরে জেড অফিসের বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও জমা করে আসছিলেন। সেইগুলো একত্র করে তিনি টিকটকে পোস্ট করেন।

প্রথমে তিনি বিষয়টি সেভাবে গুরুত্ব দেননি।

অন্যদিকে, জেফ নিজেও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। তিনি বলেন, ‘আমি তো বিষয়টি ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি। কারণ, আমি ‘দ্য অফিস’ দেখিনি, তাই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না।’

জেফের মতে, তাঁর দিনের মূল মন্ত্র হলো— কঠোর পরিশ্রম করা এবং খেলাধুলা করা। যখন কাজের সময়, তখন তাঁরা সবাই কাজে মনোযোগী হন।

আবার অবসর সময়ে তিনি কর্মীদের সঙ্গে মজা করেন এবং অফিসের পরিবেশকে আনন্দময় করে তোলেন।

জেফ আরও জানান, ভ্যাকসিন নেওয়ার সময় শার্ট খোলার বিষয়টিও ছিল বাস্তব। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন কর্মী ছিলেন এবং একজন নার্স ছিলেন।

সেই নার্স তাঁকে শার্ট খুলতে বলেন। জেফ তখন জানতে চান কেন তাঁর শার্ট খুলতে বলা হচ্ছে, কিন্তু পরে তিনি বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেন।

জেডের মতে, অফিসের এই ধরনের মজার মুহূর্তগুলো খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তিনি সব সময় জানেন না যে জেফ এরপর কী করতে যাচ্ছেন, আর এটাই তাঁর কাছে সবচেয়ে আনন্দের।

জেফ কেবল মজা করাই পছন্দ করেন না, বরং তিনি কর্মীদের ভালোভাবে মানুষ করতে চান। তিনি এমন একটি সংস্কৃতি তৈরি করতে চান যেখানে কর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে, তাঁদের উন্নতিতে সাহায্য করা হবে এবং সবার মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক থাকবে।

তাঁর লক্ষ্য হলো এমন একটি নেতৃত্ব তৈরি করা, যা অন্যদেরও নেতৃত্ব দিতে উৎসাহিত করবে।

জেফের এই ধরনের ভালো মানসিকতার কারণে তাঁর টিমের সদস্যরা কাজ করতে ভালোবাসেন। জেড বলেন, অন্য অফিস থেকেও অনেকে এসে এখানে সময় কাটান। কারণ এখানকার পরিবেশ খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ।

জেড প্রতিদিন প্রায় ৩০ মাইল পাড়ি দিয়ে অফিসে যান এবং এতে তাঁর কোনো সমস্যা হয় না। তিনি বলেন, ‘আমি আমার টিমকে ভালোবাসি, তাই এখানে আসতে আমার ভালো লাগে।’

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর জেফের অফিসে কাজ করার জন্য অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জেড জানান, তাঁরা প্রায় ১০টি জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) পেয়েছেন।

এর মধ্যে ফ্রান্সের প্যারিস থেকেও একজন আবেদন করেছেন। জেফ বিষয়টি শুনে বেশ মজা পেয়েছেন।

জেফের এই ধরনের মজাদার ও ইতিবাচক মানসিকতার কারণে তাঁর কর্মীরা সব সময় ভালো অনুভব করেন। তিনি চান, তাঁর কর্মীরা যেন ভালো মানুষ হিসেবে সমাজে পরিচিত হন এবং অন্যদেরও ভালো ব্যবহার করতে শেখান।

জেডের মতে, জেফের কাছ থেকে তিনি শিখেছেন— কোনো খারাপ ঘটনা ঘটলে তা মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। বর্তমানে, তাঁদের টিকটক অ্যাকাউন্টটি একটি ইতিবাচক প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে এবং তাঁরা সেখানে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করছেন।

জেফের মতে, তিনি ভুয়া কিছু পছন্দ করেন না। তাঁর কোনো পরিকল্পনা নেই, তবে তিনি চান মানুষ ভালো থাকুক এবং অন্যদের সাহায্য করুক।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *