পুতিনের প্রাসাদ: গোপন ক্যামেরায় প্রেসিডেন্টের স্বর্ণ ও শ্বেত পাথরের জীবন!

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ক্ষমতার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি বিশেষ তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো তার ব্যক্তিগত জীবন এবং ক্রেমলিন প্রাসাদের অভ্যন্তরীন দৃশ্য জনসাধারণের সামনে আনা হয়েছে। ‘মস্কো। ক্রেমলিন। পুতিন। ২৫ বছর’ শিরোনামের এই তথ্যচিত্রে পুতিনের ব্যক্তিগত বাসস্থানের ঝলক যেমন দেখা গেছে, তেমনই উঠে এসেছে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তার নিজস্ব মতামত।

পুতিনের এই ব্যক্তিগত বাসভবনটি ক্রেমলিনের অভ্যন্তরে অবস্থিত এবং সাদা ও সোনালী রঙের আভরণে সজ্জিত। সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, গত তিন বছর ধরে তিনি মূলত এই অ্যাপার্টমেন্টেই থাকছেন। এই সময়কালেই ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হয়। অ্যাপার্টমেন্টে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে চা পানের স্মৃতিচারণ করে পুতিন জানান, এটি তার কাছে একটি বিশেষ স্থান।

তথ্যচিত্রে দেখা যায়, পুতিন তার ব্যক্তিগত জিম এবং সাদা রঙের একটি পিয়ানোতে সময় কাটান। তিনি স্বীকার করেন, তিনি প্রায়ই তার উত্তরসূরি নিয়ে ভাবেন। ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৮৮ শতাংশ ভোট পেয়ে ২০৩০ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। উত্তরসূরি নির্বাচন প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, তিনি চান একাধিক প্রার্থী থাকুক, যাতে জনগণ তাদের পছন্দের প্রতিনিধি বেছে নিতে পারে।

তবে, নতুন নেতাকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে, তবেই তিনি গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবেন। সাক্ষাৎকারে পুতিনকে সাধারণত ঠান্ডা এবং রাশভারী প্রকৃতির মানুষ হিসেবে চিত্রিত করা হলেও, তিনি স্বীকার করেন যে মাঝে মাঝে তিনি রেগে যান। তিনি বলেন, “আমি সবসময়ই এর সঙ্গে লড়ছি।” তার অ্যাপার্টমেন্টে জার তৃতীয় আলেকজান্ডারের একটি প্রতিকৃতি দেখা যায়, যিনি ‘শান্তিবাদী’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

তবে, তার শাসনামলে রাশিয়ায় সেন্সরশিপ বৃদ্ধি করা হয়েছিল এবং রুশ ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল। ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে পুতিন এটিকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রাশিয়া এখনো পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি। তিনি আরও যোগ করেন, “আমি আশা করি, এর প্রয়োজন হবে না।

আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী।” তথ্যচিত্রে পুতিনকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে এবং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে দেখা যায়। হাসপাতালে শিশুদের সঙ্গে হাসিখুশিভাবে কথা বলা এবং সৈনিকদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করার দৃশ্যও এতে রয়েছে।

পুতিনের এই সাক্ষাৎকারটি একদিকে যেমন একজন প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়কের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে, তেমনি তার ব্যক্তিগত জীবন এবং রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার একটি গভীর চিত্র উপস্থাপন করে। এই তথ্যচিত্রের মাধ্যমে রাশিয়ার ক্ষমতা কাঠামো এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিকোণ উন্মোচন করা হয়েছে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *