নোট: এটি একটি নতুন সংবাদ নিবন্ধ, মূল নিবন্ধটির অনুবাদ নয়।
আফ্রিকার চলচ্চিত্র জগৎ-এ নাইজেরিয়ার ‘নলিউড’-এর জয়যাত্রা: ইউটিউবে ঝুঁকছেন নির্মাতারা।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চলচ্চিত্র শিল্প হিসেবে পরিচিত নাইজেরিয়ার ‘নলিউড’ এখন এক নতুন পরিবর্তনের সাক্ষী। বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের উত্থানের মাঝে, এই শিল্পের নির্মাতারা তাদের সিনেমা মুক্তি দেওয়ার জন্য বেছে নিচ্ছেন ইউটিউবকে।
নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইমের মতো বড় বড় স্ট্রিমিং পরিষেবাগুলি যখন লাভের অঙ্ক মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন ইউটিউব-এর দিকে ঝুঁকছেন তারা।
বর্তমানে নাইজেরিয়ায় সিনেমা হলের সংখ্যা খুবই কম, মাত্র ১০২টি। অন্যদিকে, টিকিটের উচ্চ দাম অনেক দর্শকের কাছে সিনেমা দেখাটা বিলাসিতা করে তুলেছে।
ফলে, সিনেমা হলমুখী দর্শকের সংখ্যাও কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে, ইউটিউব নির্মাতাদের জন্য একটি সহজলভ্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
এখানে স্বল্প খরচে সিনেমা তৈরি করে সরাসরি দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লাভ ইন এভরি ওয়ার্ড’ সিনেমাটি ইউটিউবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। মুক্তির প্রথম ২৪ ঘণ্টায় সিনেমাটি প্রায় ১০ লক্ষ ভিউ হয় এবং তিন দিনের মধ্যে তা ৫০ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়।
সিনেমার পরিচালক ওমনি ওবোলি এই সাফল্যের জন্য সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানান।
তবে, ইউটিউবে সিনেমা মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। পাইরেসি বা অননুমোদিতভাবে সিনেমা আপলোডের প্রবণতা এখানে একটি বড় সমস্যা।
এছাড়াও, ইউটিউবে সিনেমা বানানোর ক্ষেত্রে গুণগত মানের অভাব দেখা যায়। অনেক সময় স্বল্প বাজেট এবং দ্রুত সিনেমা তৈরির কারণে কলাকুশলীদের দৃশ্যও ছবিতে থেকে যায়।
এই পরিবর্তনের কারণ হিসেবে চলচ্চিত্র বিশ্লেষকরা বলছেন, স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলির মুনাফা অর্জনে ব্যর্থতা এবং সিনেমা হলের অপ্রতুলতা নির্মাতাদের ইউটিউবের দিকে আকৃষ্ট করছে।
ইউটিউবে প্রবেশ সহজ, কোনো রকম বাধানিষেধ নেই। ফলে, নতুন প্রতিভারাও তাঁদের কাজ দর্শকদের সামনে তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে, অনেকে মনে করছেন, সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল নাইজেরিয়ান টেলিভিশন অথরিটি (এনটিএ)-কে ঢেলে সাজানো যেতে পারে।
উন্নত মানের অনুষ্ঠান তৈরি করার মাধ্যমে এই চ্যানেলটি চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
নলিউডের এই নতুন যাত্রা, বিশেষ করে ইউটিউবের মাধ্যমে চলচ্চিত্র মুক্তি দেওয়ার প্রবণতা, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয় হতে পারে।
আমাদের দেশেও সীমিত প্রেক্ষাগৃহ এবং টিকিটের উচ্চ মূল্যের কারণে অনেক দর্শক সিনেমা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্ম যদি আমাদের দেশের নির্মাতাদের জন্য সহজলভ্য হয়, তাহলে হয়তো দর্শক এবং নির্মাতাদের মধ্যে একটি নতুন সম্পর্ক তৈরি হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান