যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা: ইসরায়েলের সঙ্গে সিরিয়ার গোপন সমঝোতা?

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারা’র দাবি অনুযায়ী, তাঁর সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে একটি পরোক্ষ আলোচনার মধ্যে রয়েছে। এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হল সিরিয়ার উপর ইসরায়েলি আক্রমণ বন্ধ করা।

ফরাসি রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে আল-শারা’ বলেন, “আমরা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে পরিস্থিতি শান্ত রাখা যায় এবং উভয় পক্ষেরই নিয়ন্ত্রণ হারানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি না হয়।”

তিনি আরও জানান, সিরিয়া চাইছে ইসরায়েল যেন জাতিসংঘের ১৯৭৪ সালের চুক্তি মেনে চলে। এই চুক্তির মাধ্যমে সিরিয়া এবং ইসরায়েলের মধ্যে একটি সীমান্ত চিহ্নিত করা হয়েছিল, যা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের ফিরিয়ে আনার পথ সুগম করবে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল সিরিয়ার কাছ থেকে গোলান মালভূমি দখল করে নেয়।

ডিসেম্বরে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনের পতনের পর থেকে ইসরায়েল সিরিয়ার অভ্যন্তরে আরও বেশি এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তারা সামরিক সক্ষমতা পুনর্গঠন এবং নিজেদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে এমন জঙ্গি তৎপরতা দমনের উদ্দেশ্যে একাধিকবার আক্রমণ চালিয়েছে।

প্রথমে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে সাময়িক বলা হলেও, পরবর্তীতে কর্মকর্তারা জানান যে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য সিরিয়ায় অবস্থান করবে।

সিরিয়ার দক্ষিণে ইসরায়েল একটি বাফার জোন তৈরি করেছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো সেখানকার সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সম্প্রতি ইসরায়েলের পুলিশ প্রথমবারের মতো সিরিয়ার অভ্যন্তরে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে আলোচনার জন্য একটি গোপন পথ তৈরি করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বিষয়গুলো নিয়ে এই আলোচনা চলছে।

যদিও, ইউএই’র পররাষ্ট্র বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী লানা নুসেইবেহ্‌ এই ধরনের আলোচনার সঙ্গে তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, “সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে ‘গোপন আলোচনার’ মধ্যস্থতা করছে ইউএই, এমন দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে এই আলোচনার খবর আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক সব সময়ই উত্তেজনাকর।

বিশেষ করে গোলান মালভূমি নিয়ে তাদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এমন পরিস্থিতিতে, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরুর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *