অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী কিশোর ক্যাসিয়াস টার্ভের হত্যাকাণ্ডের দায়ে দুই ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। ২০২২ সালের অক্টোবরে, ১৫ বছর বয়সী এই আদিবাসী কিশোরকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল।
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী নোঙ্গারের বাসিন্দা ক্যাসিয়াস টার্ভে স্কুলের বন্ধুদের সাথে বাড়ি ফিরছিল। পথে কয়েকজন লোক একটি লোহার রড দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে ১০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে তার মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা ২৪ বছর বয়সী জ্যাক ব্রেয়ারলি এবং ২৯ বছর বয়সী ব্রডি পামারকে ক্যাসিয়াস টার্ভের হত্যাকাণ্ডের জন্য দোষী সাব্যস্ত করেন। এছাড়া, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া ২৭ বছর বয়সী মিচেল ফোরথকে হত্যার অভিযোগে নয়, বরং কম গুরুতর অপরাধের (ম্যানস্লটার) দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার চতুর্থ আসামি, আলীশা গিলমোরকে অবশ্য সকল অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
তদন্তে জানা গেছে, ঘটনার দিন ব্রেয়ারলি ও পামার একটি পিক-আপ থেকে কয়েকজন তরুণের উপর হামলা চালায়, যাদের মধ্যে ক্যাসিয়াসও ছিল। আদালত সূত্রে জানা যায়, ব্রেয়ারলি একটি শপিং ট্রলির লোহার রড দিয়ে ক্যাসিয়াসকে আঘাত করে।
ক্যাসিয়াসের মৃত্যুর পর অস্ট্রেলিয়াজুড়ে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়। বিভিন্ন শহরে শোকসভা ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভকারীরা নিহত কিশোরের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানায় এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি হওয়া অবিচারের অবসান দাবি করে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এ সময় এই ঘটনাকে একটি “ভয়ংকর ট্র্যাজেডি” হিসেবে বর্ণনা করেন এবং এর তীব্র নিন্দা জানান।
আদিবাসী ও টরেস স্ট্রেইট দ্বীপপুঞ্জের মানুষেরা অন্যান্য অস্ট্রেলীয়দের তুলনায় নানাবিধ বৈষম্যের শিকার হন। তাদের গড় আয়ু কম, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সুযোগও সীমিত।
এছাড়াও, কারাবাসের হারও তাদের মধ্যে বেশি।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা