কাশ্মীরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ তীব্র রূপ নিয়েছে, যার ফলে উভয় পক্ষের সীমান্তে গোলাগুলি ও মর্টার হামলা চলছে।
বুধবার উভয় দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির পর এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সাম্প্রতিক এই সংঘাতে সাধারণ নাগরিকসহ অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বুধবার ভারতের হামলার তীব্র নিন্দা করে এর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ভারতীয় হামলায় কমপক্ষে ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, ভারতের দাবি, পাকিস্তানের দিক থেকে চালানো হামলায় ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক ও একজন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের সামরিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, বুধবার ভারতীয় বাহিনী কাশ্মীর সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি)-র কাছে হামলা চালায়।
এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীও “আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা” হিসেবে পাল্টা জবাব দিয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরী এক বিবৃতিতে জানান, সেনাবাহিনী “তাদের পছন্দসই সময়ে, স্থানে ও পদ্ধতিতে” জবাব দিতে প্রস্তুত ছিল।
এদিকে, ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের সেনারাও সীমান্তে “ছোট অস্ত্র ও আর্টিলারি” ব্যবহার করে “যথাযথভাবে” জবাব দিয়েছে।
তবে তারা বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
উভয় দেশের মধ্যে এই নতুন করে উত্তেজনা শুরুর কারণ হিসেবে জানা যায়, সম্প্রতি ভারতীয়-শাসিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতি।
ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান তা অস্বীকার করেছে।
এই ঘটনার জের ধরে ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে “সন্ত্রাসী ঘাঁটি” লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে।
সংঘর্ষের ফলে সীমান্তের উভয় পাশে বসবাসকারী মানুষজন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণাধীন কাশ্মীরের মুজাফ্ফরাবাদে ভারতীয় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এক ব্যক্তি জানান, তাদের থাকার কোনো জায়গা নেই।
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে বিরোধ শুরু হয়।
এরপর থেকে এই অঞ্চলটি বহুবার উভয় দেশের মধ্যে সংঘাতের কারণ হয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা