ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতি, উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ
নয়াদিল্লি, ইসলামাবাদ – ভারত সম্প্রতি পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার জেরে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে।
কাশ্মীর সহ পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে চালানো এই হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে, এমনটাই খবর পাওয়া গেছে। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা জঙ্গিগোষ্ঠীর ঘাঁটি লক্ষ্য করে এই হামলা চালিয়েছে, যারা অতীতে ভারতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।
তবে পাকিস্তানের দাবি, হামলায় সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে এবং এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
গত কয়েক দশক ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। উভয় দেশই এই অঞ্চলের মালিকানা দাবি করে এবং এর জেরে প্রায়ই সীমান্তে উত্তেজনা দেখা যায়।
সম্প্রতি ভারতের এই পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের এই হামলা প্রতিশোধমূলক এবং এর মূল উদ্দেশ্য হলো অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনগুলোর তৎপরতা কমানো যাবে না। বরং এর ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে এবং দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
অতীতেও দেখা গেছে, উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং এর ফলস্বরূপ উত্তেজনা আরও বেড়েছে। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধ, কিংবা ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার মতো ঘটনাগুলো দুই দেশের সম্পর্ককে তিক্ত করে তোলে।
ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা (LeT) এবং জইশ-ই-মোহাম্মদের (JeM) ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এই দুটি সংগঠন অতীতে ভারতে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল।
যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তবে তারা স্বীকার করেছে যে কিছু জঙ্গি সংগঠন তাদের দেশে সক্রিয় রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, উভয় দেশকেই সংযত হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। যেকোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে এবং এর ফলে পুরো অঞ্চলের শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে।
বাংলাদেশের জন্যেও এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেশী দেশগুলোতে অস্থিরতা দেখা দিলে তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে।
তাই, আন্তর্জাতিক মহল চাইছে, ভারত ও পাকিস্তান আলোচনার মাধ্যমে তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করুক এবং শান্তি বজায় রাখুক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে উত্তেজনা কমানো এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কোনো বিকল্প নেই। সামরিক পদক্ষেপ উভয় দেশের জন্যই ক্ষতিকর।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা