গাজায় ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ‘গণহত্যা’ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দল। তারা বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে অবর্ণনীয় মানবিক বিপর্যয় ঘটবে।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক পরিষদের অধীনে থাকা ২০ জনের বেশি বিশেষজ্ঞ বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিশ্ববাসীর সামনে এখন দুটি পথ খোলা: হয় নীরব থেকে নিরীহ মানুষের হত্যাযজ্ঞ দেখা, অথবা একটি ন্যায়পূর্ণ সমাধানে সহায়তা করা।
তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই ‘নৈতিক অবক্ষয়’ রোধ করতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় তাদের অভিযান আরও বড় আকারে প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার বাসিন্দাদের বেশিরভাগকে বাস্তুচ্যুত করা হবে, তারা গাজার কিছু অংশ দখল করবে, ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ গাজায় বিতাড়িত করা হবে এবং সহায়তা বিতরণের নিয়ন্ত্রণ নেবে বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থাগুলো।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গাজার পরিস্থিতিকে ‘আগে দেখা সবচেয়ে সংকটপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, মাদ্রিদ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব পেশ করবে, যার লক্ষ্য হলো ‘নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা বন্ধ করা এবং গাজায় মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা’।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারও গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরের পরিস্থিতিকে ‘ক্রমবর্ধমানভাবে অসহনীয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাজা কাল্লাস জানিয়েছেন, ব্রাসেলস ইসরায়েলকে মানবিক সহায়তা বিতরণের প্রস্তাব দিয়েছে, যদি তারা অন্য কোনো সংস্থার উপর আস্থা রাখতে না পারে।
বৃহস্পতিবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও এক ডজনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর আগে বুধবার নিহত হয়েছিলেন ১০০ জনের বেশি।
উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, বুধবার গাজা শহরে নিহত ও আহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু ছিল।
এদিকে, ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন (ডব্লিউসিকে), যারা গাজায় এখনো চালু থাকা কয়েকটি বেকারি পরিচালনা করছিল, তারা জানিয়েছে, খাদ্য ও অন্যান্য সরঞ্জামের অভাবে তাদের পক্ষে আর খাবার তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না।
তারা জানিয়েছে, জর্ডান ও মিশর থেকে অতিরিক্ত খাদ্য ও সরঞ্জাম সীমান্তের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের অনুমতি ছাড়া ত্রাণ প্রবেশ করানো সম্ভব নয়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা