দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানে ইউরোপে বিজয় দিবস (ভিই ডে)-এর ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন দেশে নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যে এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাজা তৃতীয় চার্লস এবং যুবরাজ উইলিয়াম।
বৃহস্পতিবার ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাজা ও যুবরাজ যুদ্ধাহত সৈনিকদের প্রতি সম্মান জানিয়ে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় তাঁদের বুকে সামরিক মেডেল পরিহিত ছিল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রবীণ অনেক সেনা সদস্য, যাঁদের হুইলচেয়ারে দেখা যায়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির আত্মসমর্পণকে স্মরণ করে সারা দেশে দুই মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি আজও ইউরোপের অনেক দেশে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। বর্তমান সময়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে এই দিবসটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
শুধু যুক্তরাজ্য নয়, ফ্রান্স, জার্মানি এবং রাশিয়ায়ও পালিত হয়েছে বিজয় দিবস। মস্কোতে অনুষ্ঠিত হয় সামরিক কুচকাওয়াজ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার এই দিনটিকে সাহস, আত্মত্যাগ ও প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এটি শুধু ব্রিটেনের নয়, বরং ঘৃণা, স্বৈরাচার ও খারাপ শক্তির বিরুদ্ধে ভালোর জয়।
অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই বিজয়কে ‘পবিত্র’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং তাঁর দেশ যে ‘নব্য-নাৎসিবাদ’-এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে, সে কথা বলেন। যদিও ইউক্রেন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্যারিসে ফরাসি বীর চার্লস দ্য গলের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং আর্ক ডি ট্রায়াম্ফে সেনা কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। বার্লিনে জার্মানির পার্লামেন্টে বিশেষ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার বক্তব্য রাখেন।
বিজয় দিবসের এই অনুষ্ঠানে প্রবীণ অনেক যুদ্ধফেরত সৈনিক উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের অধিকাংশই বর্তমানে নব্বইয়ের কোঠায় পৌঁছেছেন। তাঁদের স্মৃতিচারণা ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি আজও অম্লান। বিশ্বজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।
তথ্য সূত্র: সিএনএন