যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য: বাণিজ্য চুক্তিতে ট্রাম্পের বাজিমাত?

যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে চলেছে, যা উভয় দেশের জন্যই রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এই চুক্তির মূল লক্ষ্য হলো প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে আরোপিত কিছু শুল্ক হ্রাস করা, যা বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

খবর অনুযায়ী, এই চুক্তির ফলে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের জন্য এটি একটি রাজনৈতিক বিজয় হতে পারে। অন্যদিকে, ট্রাম্পও তাঁর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির পক্ষে এই চুক্তিকে একটি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরতে পারেন। যদিও চুক্তির বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি মূলত গাড়ির যন্ত্রাংশসহ কিছু নির্দিষ্ট খাতে শুল্ক কমানোর ওপর গুরুত্ব দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যুক্তরাজ্যের গাড়ি ও ইস্পাত রপ্তানির ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই চুক্তির মাধ্যমে সেই শুল্কের বোঝা কমানোর চেষ্টা করা হবে। ব্রিটেনের প্রধান লক্ষ্য হলো তাদের গাড়ি ও ইস্পাত শিল্পের ওপর থেকে এই শুল্ক প্রত্যাহার করা।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের কৃষি পণ্য বাজারজাত করার ক্ষেত্রেও সুবিধা চাইবে। যুক্তরাজ্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্র একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার। ব্রিটেনের মোট রপ্তানির একটি বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রেই যায়।

তবে, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রেরই লাভ বেশি। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যে প্রায় ১১.৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বিক্রি করেছে।

এই চুক্তির প্রেক্ষাপটে, ব্রিটেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে। তবে, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ট্রাম্প যে শুল্ক আরোপ করেছিলেন, এই চুক্তি সেই সমস্যার কতটা সমাধান করতে পারবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

যুক্তরাজ্য সরকার মনে করে, এই চুক্তি স্টারমারের সরকারের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। এর আগে, ব্রিটেন ভারতের সঙ্গেও একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এছাড়া, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়ার পর ইইউ-এর সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কিছু বাধা দূর করার চেষ্টা করছে।

এই বাণিজ্য চুক্তি বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে। কারণ, উন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি বিশ্ব বাজারের গতি প্রকৃতিকে প্রভাবিত করে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উচিত, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তিগুলোর প্রতি গভীর মনোযোগ দেওয়া এবং নিজেদের রপ্তানি বাজারকে আরও বিস্তৃত করার চেষ্টা করা।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *