ছিঃ! প্রজন্মের চোখে ‘আনকুল’ কেন মিলেইনিয়ালরা?

শিরোনাম: প্রজন্মের ‘কুল’ বদলায়: কেন মিলিনিয়ালদের চোখে ‘আনকুল’ জেনারেশন জেড?

সমাজ সবসময়ই পরিবর্তনের পথে হাঁটে, আর এই পরিবর্তনের ঢেউ লাগে প্রজন্মের পর প্রজন্মে। একটা সময় যে জিনিসটা ‘কুল’ ছিল, নতুন প্রজন্মের চোখে সেটাই হয়তো ‘আনকুল’ বা গতানুগতিক।

সম্প্রতি, এই পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে সামাজিক মাধ্যমে, ফ্যাশনে এবং জীবনযাত্রার ধরনে। মিলিনিয়াল প্রজন্ম, যারা একসময় নিজেদের ‘কুল’ ভাবতেন, এখন জেনারেশন জেড বা জেড প্রজন্মের কাছে যেন কিছুটা ‘আনকুল’ হয়ে গিয়েছেন।

এই ‘আনকুল’ তকমাটা লেগেছে মূলত তাদের কিছু পছন্দের কারণে। যেমন, মিলিনিয়ালদের ফ্যাশন সেন্স নিয়ে জেনারেশন জেড-এর তীব্র আপত্তি।

উদাহরণস্বরূপ, মিলিনিয়ালদের ‘স্কিনি জিন্স’ -এর বদলে এখনকার তরুণ প্রজন্মের পছন্দের তালিকায় রয়েছে ঢিলেঢালা, ব্যাগি প্যান্ট। শুধু পোশাক নয়, খাদ্যাভ্যাসেও এসেছে পরিবর্তন। মিলিনিয়ালদের ‘অ্যাভোকাডো টোস্ট’-এর বদলে জেনারেশন জেড-এর পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ‘ম্যাচা’।

সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারেও রয়েছে ভিন্নতা। মিলিনিয়ালরা যেখানে নিজেদের ভালো দিকগুলো তুলে ধরতে পছন্দ করেন, সেখানে জেনারেশন জেড-এর সদস্যরা অনেক বেশি খোলামেলা এবং ‘অগোছালো’ ছবি দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাদের মধ্যে ‘কুল’ থাকার সংজ্ঞাটাও যেন আলাদা।

হাসি-কান্না বোঝাতে তারা ‘ক্রাইং-ফেস’ ইমোজির বদলে ব্যবহার করে ‘স্কাল’ ইমোজি।

তবে, মিলিনিয়ালদের ‘আনকুল’ হওয়ার পেছনে কেবল ফ্যাশন বা রুচির পরিবর্তনই দায়ী নয়।

এর পেছনে রয়েছে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তির প্রভাব। এই প্রজন্মের মানুষগুলো বেড়ে উঠেছে এমন এক সময়ে, যখন প্রযুক্তি দ্রুতগতিতে বিস্তার লাভ করেছে। তারা ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে পরিচিত হয়েছে, কিন্তু তাদের শৈশব ছিল কিছুটা অন্যরকম।

একটা সময় ছিল, যখন স্মার্টফোন ছিল না, ইন্টারনেট এত সহজলভ্য ছিল না। ফলে, তাদের জীবনযাত্রায় ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রভাব জেনারেশন জেড-এর চেয়ে হয়তো কিছুটা ভিন্ন।

জেনারেশন জেড-এর সদস্যরা তাদের আগের প্রজন্মের থেকে অনেক বেশি সচেতন এবং বাস্তববাদী। তারা সামাজিক সমস্যা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত।

সম্ভবত, এই কারণেই তাদের মধ্যে ‘ঠাট্টা’ করার প্রবণতা বেশি, যা মিলিনিয়ালদের থেকে তাদের আলাদা করে।

অবশ্য, প্রজন্মের এই বিভাজন নতুন কিছু নয়। অতীতেও প্রত্যেক প্রজন্ম তাদের আগের প্রজন্মের রুচি, ফ্যাশন এবং জীবনযাত্রার ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

তবে, বর্তমান ডিজিটাল যুগে, এই বিভাজন আরও স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। সামাজিক মাধ্যম এই প্রজন্মের মধ্যেকার পার্থক্যগুলো তুলে ধরেছে এবং ‘কুল’ থাকার নতুন সংজ্ঞা তৈরি করেছে।

তবে, ‘কুল’ বা ‘আনকুল’-এর এই সংজ্ঞা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলায়। হয়তো, কয়েক বছর পর জেনারেশন জেড-ও তাদের পরের প্রজন্মের কাছে ‘আনকুল’ হয়ে উঠবে।

শেষ পর্যন্ত, ‘কুল’ হওয়াটা হয়তো ব্যক্তি-নির্ভর, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *