যুদ্ধবিরতির মাঝে লেবাননে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা, নিহত!

লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১ জন নিহত, আহত ৮

গত কয়েক মাসে লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, যার ফলস্বরূপ বৃহস্পতিবার (৯ মে) ইসরায়েলি বিমান বাহিনী লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে।

এতে অন্তত ১ জন নিহত এবং ৮ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, ইসরায়েলি বিমানগুলো দেশটির সীমান্ত থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাবাতিয়া অঞ্চলের কয়েকটি স্থানে আঘাত হানে। হামলার পর ঐ এলাকা থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায় এবং বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটে যায়।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো “হিজবুল্লাহর অবকাঠামোকে” লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে। তবে তারা বিস্তারিত কিছু জানায়নি। অন্যদিকে, হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র-মধ্যস্থতা চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর হিজবুল্লাহ সীমান্ত থেকে তাদের যোদ্ধাদের সরিয়ে নেয় বলে জানা যায়।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এক টুইট বার্তায় বলেছেন, তিনি দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতিও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৭১১ নম্বর প্রস্তাব এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে, তা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। লেবানন সরকার ইসরায়েলকে তাদের এলাকা থেকে সম্পূর্ণভাবে সেনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য করতে বদ্ধপরিকর।

যদিও যুদ্ধবিরতি এখনো বহাল রয়েছে, কিন্তু সীমান্ত অঞ্চলে মাঝে মাঝেই হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ইসরায়েল প্রায়ই এই চুক্তি লঙ্ঘন করে লেবাননের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালায় এবং হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতেও আঘাত হানে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, লিতানি নদীর দক্ষিণে হিজবুল্লাহ বা অন্য কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর অস্ত্র রাখা বা কার্যক্রম চালানোর অনুমতি নেই। একইসঙ্গে ইসরায়েলেরও উচিত ছিল দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া এবং লেবাননের সেনাবাহিনীকে সেখানে মোতায়েন করতে দেয়া।

কিন্তু উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে এই চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। বর্তমানে ইসরায়েল সীমান্ত বরাবর পাঁচটি কৌশলগত পাহাড়ের চূড়া দখল করে রেখেছে।

এর আগে, লেবানন থেকে ইসরায়েলের দিকে দুটি রকেট হামলার ঘটনা ঘটলেও হিজবুল্লাহ এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় হামাসের প্রতি হিজবুল্লাহর সমর্থনের কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে এই সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে। হিজবুল্লাহর উপ-প্রধান নাঈম কাসেম জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তানুসারে, তাদের দল এখন সীমান্ত অঞ্চলে কোনো অস্ত্র মজুত করে না।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *