ট্রাম্পের মেয়াদেই কি আকাশে উড়বে নতুন এয়ার ফোর্স ওয়ান?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জন্য প্রস্তুত করা নতুন ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ বিমান সরবরাহ করতে আরও বেশি সময় নিচ্ছে বোয়িং। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত এই বিমান সরবরাহ করা সম্ভব নাও হতে পারে।

খবরটি এমন সময় এসেছে, যখন এর আগে একাধিকবার বিমানটির নির্মাণে বিলম্ব হয়েছে।

বোয়িং কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানা যায়, বিমানটি তৈরির মূল সময়সীমা ছিল ২০২২ সাল। তবে নির্মাণে নানা জটিলতার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি।

সম্প্রতি মার্কিন বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, ২০২৭ সালের মধ্যে বিমানটি হস্তান্তরের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর অ্যাকুইজিশন প্রধান ডার্লিন কস্টেলো সম্প্রতি কংগ্রেসের একটি কমিটিতে এ বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

তিনি জানান বিমান সরবরাহ চুক্তি চূড়ান্ত করতে বোয়িং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে চুক্তির কিছু শর্ত শিথিল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যাতে দ্রুত কাজ শেষ করা যায়।

জানা গেছে, কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করার কথা ভাবা হচ্ছে। মূলত কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু জটিলতার কারণেও কাজটি পিছিয়ে যাচ্ছিল।

বোয়িং কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

তবে এই প্রকল্পটি বোয়িংয়ের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মার্কিন সরকারের সঙ্গে তাদের বিশাল চুক্তি রয়েছে।

বোয়িংয়ের আয়ের প্রায় ৪২ শতাংশ আসে মার্কিন সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে।

যদিও ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ প্রকল্পটি তাদের জন্য বেশ ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রায় ২৫০ কোটি ডলারের বেশি লোকসান হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিমান সরবরাহ বিলম্বিত হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে।

২০১৭ সালে চুক্তি স্বাক্ষরের পর, বোয়িং অন্য একটি গ্রাহকের জন্য তৈরি করা দুটি ৭৪৭ বিমান সংস্কারের কাজ শুরু করে, যা পরে ওই গ্রাহকের দেউলিয়া হওয়ার কারণে সরবরাহ করা যায়নি।

এই সংস্কার প্রক্রিয়াটি নতুন করে বিমান তৈরির চেয়ে বেশি সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া কোভিড-১৯ মহামারীর কারণেও কাজে অনেক দেরি হয়েছে।

বর্তমানে যে দুটি বিমান ব্যবহৃত হচ্ছে, সেগুলোর মেয়াদ প্রায় ৩৫ বছর।

জর্জ এইচ.ডব্লিউ. বুশের সময় থেকে এই বিমানগুলো ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বিমান সরবরাহের বিলম্ব নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন।

তিনি দ্রুত বিমান সরবরাহ করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।

বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কেলি ওর্টবার্গ জানিয়েছেন, তারা দ্রুত বিমান তৈরির চেষ্টা করছেন।

এমনকি এই কাজে সহায়তার জন্য তিনি এলন মাস্কের পরামর্শও নিয়েছেন।

বিমান প্রস্তুতের মূল চ্যালেঞ্জ হলো, একটি সাধারণ বোয়িং ৭৪৭-কে কীভাবে এমনভাবে তৈরি করা যায়, যা প্রেসিডেন্টের জন্য সুরক্ষিত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সামরিক কমান্ড সেন্টার হিসেবে কাজ করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো সময় বিমান তৈরি করা সম্ভব, তবে এর ভেতরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করতে অনেক বেশি সময় লাগে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *