বিষাক্ত হত্যার শিকার পাইলট শিক্ষিকা! স্বামী ও শাশুড়ি গ্রেপ্তার, তোলপাড়!

ব্রাজিলের এক নারী শরীরচর্চা প্রশিক্ষকের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত লারিসা রদ্রিগেজ (৩৭)-কে হত্যার অভিযোগে তাঁর স্বামী এবং শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, লারিসাকে বিষ প্রয়োগ করে মারা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মার্চ মাসের ২২ তারিখে সাও পাওলো রাজ্যের রিবেরাও প্রিতো শহরে নিজের ফ্ল্যাটে লারিসার মৃতদেহ পাওয়া যায়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, লারিসার স্বামী, ডা. লুইজ আন্তোনিও গার্নিকা (৩৮) এবং তাঁর মা, এলিজাবেতে আাররাবাছা (৬৭)-এর যোগসাজশে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

অভিযুক্তদের গত ৬ই মে গ্রেপ্তার করা হয়।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, লারিসা তাঁর স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছিলেন।

পুলিশের ধারণা, লারিসাকে ধীরে ধীরে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছিল। স্থানীয় পুলিশ প্রধান ফার্নান্দো ব্রাভো জানিয়েছেন, লারিসা তাঁর বন্ধুদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন যে শাশুড়ির বাড়ি আসার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তেন।

তদন্তে জানা গেছে, লারিসার শরীরে ‘চুমবিনহো’ নামক এক প্রকার কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

ব্রাজিলে এই কীটনাশকটি সহজে পাওয়া যায় না এবং ঘরোয়া ব্যবহারের জন্য এর বিক্রি নিষিদ্ধ। এই কীটনাশক শরীরে গেলে স্নায়ু দুর্বল হয়ে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধীরে ধীরে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ফরেনসিক রিপোর্টে আরও জানা যায়, লারিসার শরীরে সীসার অস্তিত্বও ছিল।

পুলিশ সূত্রে খবর, লারিসার মৃত্যুর ১৫ দিন আগে এলিজাবেতে সীসা কেনার চেষ্টা করেছিলেন এবং এক খামার মালিক বন্ধুকে ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন, তাঁর কাছে এই উপাদানটি আছে কিনা।

পুলিশ কর্মকর্তা ব্রাভো জানান, লারিসার মৃত্যুর পর গার্নিকা অ্যাপার্টমেন্ট পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছিলেন, যা প্রমাণ লোপাটের একটি চেষ্টা বলেই মনে করা হচ্ছে।

ঘটনার দিন লারিসার সঙ্গে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন গার্নিকার অন্য এক প্রেমিকা।

গ্রেপ্তারের পর এলিজাবেতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

অন্যদিকে, গার্নিকার আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।

এদিকে, লারিসার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু জানিয়েছেন, ঘটনার কিছুদিন আগেও লারিসা তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময় জানিয়েছিলেন, তিনি এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না।

বন্ধুটি আরও জানান, লারিসা সম্ভবত কোনো অজানা ভয়ে ভীত ছিলেন।

এই ঘটনার তদন্তের অংশ হিসেবে, গার্নিকার বোন যিনি ফেব্রুয়ারিতে মারা যান, তাঁর মৃতদেহ পুনরায় উত্তোলনের আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *