যুক্তরাষ্ট্রে এক নার্স প্র্যাকটিশনার, যিনি তাঁর গর্ভবতী প্রেমিকার শরীরে গোপনে গর্ভপাতের ওষুধ প্রবেশ করানোর অভিযোগে অভিযুক্ত, তাকে এখন ইলেকট্রনিক মনিটরিং ডিভাইস থেকে মুক্তি দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ডেভিড কুটস নামে ৪৩ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণেরও অভিযোগ রয়েছে।
ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের গিগ হারবার এলাকার বাসিন্দা ডেভিড কুটস পেশায় ছিলেন একজন নার্স প্র্যাকটিশনার।
গত ১১ই মার্চ তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, তিনি তাঁর প্রেমিকার শরীরে যৌন মিলনের সময় গোপনে গর্ভপাতের ওষুধ প্রবেশ করিয়েছেন।
এছাড়াও, সাক্ষী প্রভাবিত করারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য নিউজ ট্রিবিউন’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিল মাস থেকে কুটসের নার্স প্র্যাকটিশনারের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে জানা যায়, ডেভিড কুটস বিবাহিত এবং তাঁর পাঁচ সন্তান রয়েছে। তাঁর প্রেমিকাও ছিলেন তাঁর রোগী।
সম্পর্কের সূত্র ধরে তিনি ওই নারীর সঙ্গে গত বছর থেকে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। জানুয়ারিতে ওই নারী জানতে পারেন যে তিনি গর্ভবতী।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, তখন কুটস তাকে “অতিরিক্ত সমর্থন” জুগিয়েছিলেন। কিন্তু ওই নারীর ধারণা, কুটস অন্তত দু’বার তাঁর গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করেছিলেন।
আদালতের নথিপত্র অনুযায়ী, কুটস নিজের জন্য কিছু মিসোপ্রস্টল পিল সংগ্রহ করেন এবং যৌন মিলনের সময় গোপনে তাঁর প্রেমিকার শরীরে প্রবেশ করান।
এদিকে, ডেভিডের স্ত্রী মেলিসা কুটসও এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন।
তিনি তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষীকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। তিনি ওই নারীকে ঘটনার বিষয়ে মুখ না খোলার জন্য ২,০০০ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
তিনি নাকি বলেছিলেন, যদি ওই নারী পুলিশের কাছে সব কথা বলেন, তবে তা তাঁর এবং ডেভিডের জীবন নষ্ট করে দেবে।
অভিযোগ রয়েছে, ৫ই ফেব্রুয়ারি ডেভিড কুটস, ওই নারীকে ক্রমাগত বার্তা পাঠিয়েছেন, এমনকি আদালতের সুরক্ষা আদেশ জারির কিছুক্ষণ আগেও তিনি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এছাড়াও, তিনি ওই নারীর বাড়ির বাইরে উপহার ও ফুল রেখে এসেছিলেন। এই কারণে তাঁকে সুরক্ষা আদেশের বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
আদালতের নথিপত্র অনুযায়ী, সম্প্রতি ডেভিড কুটস এপ্রিল মাসের ১১ তারিখে বিউটিশিয়ানের লাইসেন্স পেয়েছেন।
‘দ্য নিউজ ট্রিবিউন’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুটসের নতুন ব্যবসা ‘সিস্টিক অ্যাকনে, অ্যালোপেসিয়া, রোজাসিয়া এবং হাইপারপিগমেন্টেশন’-এর মতো সমস্যাগুলির সমাধানে সহায়তা করবে।
লাইসেন্স প্রদানকারী দপ্তর জানিয়েছে, কসমেটোলজি লাইসেন্সের জন্য ফৌজদারি রেকর্ড পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয় না।
তবে, আবেদনপত্রে কোনো অপরাধের জন্য অভিযুক্ত হলে তা জানাতে হয়, এবং কুটস তা জানাননি।
দপ্তর আরও জানায়, তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগের বিষয়টি জানার পর, তাঁর বিউটিশিয়ান লাইসেন্স পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
আদালতে শুনানির সময়, নির্যাতনের শিকার নারী বিচারক স্ট্যানলি রামবকে জানান, কুটসের পায়ের গোড়ালির মনিটর তাঁর মনে শান্তি এনেছিল।
তিনি বলেন, ‘আমি বোঝাতে পারছি না এটা কতটা ভয়ের।’ তিনি আরও জানান, মনিটর সরিয়ে নিলে তিনি তাঁর মেয়ের সাথে রাজ্য ছেড়ে চলে যাবেন।
‘আমি তাকে (কূট্স) আমার বাড়িতে আসার ব্যাপারে এতটাই ভীত’, তিনি যোগ করেন।
আদালতের খবর অনুযায়ী, আগামী ১৪ই মে ডেভিড কুটসকে তাঁর গোড়ালির মনিটর খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
তবে, তিনি এখনও ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না। আগামী ৬ই জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
তথ্য সূত্র: পিপল