যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি সাশ্রয়ী কর্মসূচি ‘এনার্জি স্টার’ বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে দেশটির পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (ইপিএ)। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, এই পদক্ষেপের ফলে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি ভোক্তাদের অর্থ সাশ্রয়ে সহায়তা করা একটি দীর্ঘ-প্রতিষ্ঠিত কর্মসূচি হুমকির মুখে পড়তে পারে।
১৯৯২ সালে শুরু হওয়া ‘এনার্জি স্টার’ প্রোগ্রামটি পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে সাহায্য করা এবং পরিবেশবান্ধব পণ্য কিনতে ভোক্তাদের উৎসাহিত করা।
এই প্রোগ্রামের অধীনে, রেফ্রিজারেটর, ডিশওয়াশারসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যের জন্য ‘এনার্জি স্টার’ লেবেল ব্যবহার করা হতো। ভোক্তারা এই লেবেল দেখে সহজে বুঝতে পারতেন, কোন পণ্যটি বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
যদি এই প্রোগ্রামটি বন্ধ হয়ে যায়, তবে এর ফলে একদিকে যেমন ভোক্তাদের জন্য সঠিক পণ্য বাছাই করা কঠিন হবে, তেমনি পরিবেশের উপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, ‘এনার্জি স্টার’ প্রোগ্রামটি চালু থাকার কারণে বছরে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হয়েছে এবং কার্বন নিঃসরণ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
ইপিএ জানিয়েছে, তারা তাদের কর্মপদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো কার্যক্রমের দক্ষতা বৃদ্ধি করা। তবে সমালোচকদের মতে, এই পরিবর্তনের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া পদক্ষেপগুলো দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
তারা মনে করেন, ‘এনার্জি স্টার’-এর মতো কর্মসূচিগুলো ভোক্তাদের সচেতন করে এবং পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উন্নত বিশ্বে শক্তি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই জরুরি। কারণ, এর মাধ্যমে একদিকে যেমন বিদ্যুতের বিল কমানো যায়, তেমনি কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে পরিবেশের ক্ষতিও হ্রাস করা সম্ভব।
বাংলাদেশেও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্য ব্যবহারের গুরুত্ব বাড়ছে। বর্তমানে, বাংলাদেশেও সরকার পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের উপর জোর দিচ্ছে।
এখানেও বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে, তাই সাশ্রয়ী উপায়ে বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো পরিবার ‘এনার্জি স্টার’ লেবেলযুক্ত পণ্য ব্যবহার করে, তবে তারা বছরে প্রায় ৪৫০ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪৯,০০০ টাকার সমান) পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, এই ধরনের প্রোগ্রাম বন্ধ হয়ে গেলে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং পরিবেশের উপরও বিরূপ প্রভাব পড়বে।
যদিও এই প্রোগ্রামটি এখনো বন্ধ হয়নি, তবে এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমাদের দেশেও এ ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে, যা মানুষকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে উৎসাহিত করবে এবং পরিবেশ সুরক্ষায় সাহায্য করবে।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।