শামুকের ঘাড় থেকে ডিম পাড়ার বিরল দৃশ্য! স্তম্ভিত বিজ্ঞানীরা!

বিপন্ন একটি প্রজাতির শামুক, যা নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট অগাস্টাস অঞ্চলে পাওয়া যায়, প্রথমবারের মতো নিজের ঘাড় দিয়ে ডিম পাড়ল। বিজ্ঞানীরা এই বিরল দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দী করেছেন, যা প্রকৃতি প্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

বিশেষ করে, একটি সংরক্ষণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে শামুকটির ডিম পাড়ার এই ঘটনা সত্যিই উল্লেখযোগ্য।

মাউন্ট অগাস্টাস শামুক (Powelliphanta augusta) নামে পরিচিত এই প্রজাতিটি নিউজিল্যান্ডের একটি বিশেষ অঞ্চলের বাসিন্দা। এদের জীবনযাত্রা এবং প্রজনন প্রক্রিয়া অন্যান্য শামুক থেকে বেশ ভিন্ন।

বিজ্ঞানীরা জানান, এই শামুকগুলো উভলিঙ্গ (Hermaphrodite) হয়ে থাকে, অর্থাৎ এদের শরীরে পুরুষ ও স্ত্রী উভয় প্রজনন অঙ্গ বিদ্যমান। সাধারণত এরা সঙ্গীর সঙ্গে মিলিত হয়ে ডিম পাড়ে, তবে প্রয়োজনে নিজেরাই ডিম্বাণু নিষিক্ত করতে পারে।

প্রায় ২০ বছর আগে, এই শামুক প্রজাতিকে রক্ষার উদ্দেশ্যে একটি সংরক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। মূলত, সেখানকার খনিজ সম্পদ উত্তোলনের জন্য পাহাড় কাটার পরিকল্পনা নেওয়ায় এদের আবাসস্থল হুমকির মুখে পড়েছিল।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই শামুকগুলো আকারে বেশ বড় হয় এবং এদের ডিম পাড়ার প্রক্রিয়াও বেশ সময়সাপেক্ষ। একটি শামুক বছরে গড়ে মাত্র ৫টি ডিম পাড়ে এবং সেই ডিম ফুটে বাচ্চা হতে এক বছরের বেশি সময় লাগে।

সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে, বিজ্ঞানীরা শামুকগুলোকে একটি আবদ্ধ পরিবেশে রেখে তাদের প্রজনন এবং জীবনযাত্রার উপর নজর রাখেন। ডিম পাড়ার এই বিরল দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দী করার সময়, বিজ্ঞানীরা নিয়মিত ওজন পরীক্ষা করছিলেন।

তাঁরা জানান, ঘাড় থেকে ডিম বের হতে দেখাটা ছিল অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত এবং একইসঙ্গে অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি মুহূর্ত।

এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানী লিসা ফ্ল্যানাগান জানান, তাঁদের তত্ত্বাবধানে থাকা কিছু শামুকের বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই শামুকগুলো তাদের প্রজনন ক্ষমতার জন্য পরিচিত, তবে এদের বেড়ে উঠতে প্রায় আট বছর সময় লাগে।

এই শামুকের প্রজাতিটি নিউজিল্যান্ডে আসা ক্ষতিকর বাগান শামুকের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, যা খুব দ্রুত বংশবৃদ্ধি করতে পারে।

বর্তমানে, এই সংরক্ষণ কেন্দ্রে প্রায় ১,৮৮৪টি শামুক (শাবক থেকে বয়স্ক) এবং ২,১৯৫টি ডিম রয়েছে। বিজ্ঞানীরা নতুন করে এদের বসবাসের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করছেন এবং তাদের জীবনযাত্রার উপর নিয়মিত নজর রাখছেন।

এই বিরল ঘটনার মাধ্যমে, প্রকৃতি এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *