যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনে একটি স্কুলে বন্দুক হামলার ঘটনায় ১৫ বছর বয়সী মেয়ের বাবাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় আদালতের নথি অনুযায়ী, ৪২ বছর বয়সী জেফ রুপনও’কে মেয়ের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
গত বছর এই কিশোরী তার শিক্ষক এবং এক সহপাঠীকে গুলি করে হত্যা করে, পরে সে নিজেও আত্মহত্যা করে।
ঘটনাটি ঘটেছিল উইসকনসিনের ম্যাডিসন শহরের অ্যাবানডেন্ট লাইফ ক্রিশ্চিয়ান স্কুলে। ২০১৬ সালের ১৬ই ডিসেম্বর, ন্যাটালি রুপনও নামের ওই কিশোরী ক্লাসরুমে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়।
এতে শিক্ষক এরিন মিশেল ওয়েস্ট এবং ১৪ বছর বয়সী রুবি ভেরগারা নিহত হয়। এছাড়া আরও ৬ জন আহত হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রুপনও তার বাবার কাছ থেকে দুটি সেমি-অটোমেটিক পিস্তল পেয়েছিল – একটি ৯ মিলিমিটারের গ্লক হ্যান্ডগান এবং অন্যটি .২২ ক্যালিবারের সিগ সয়ার পিস্তল।
জেফ রুপনও তার মেয়ের হাতে বন্দুক তুলে দিয়েছিলেন, যদিও তিনি দাবি করেছেন যে তিনি মেয়েকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। ক্রিসমাসের উপহার হিসেবে মেয়েকে একটি বন্দুকও দিয়েছিলেন তিনি।
আদালতের অভিযোগনামায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, হামলার আগে ন্যাটালি একটি খাতা লিখেছিল, যার শিরোনাম ছিল “মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ”। সেখানে সে মানুষের প্রতি ঘৃণা এবং স্কুল হামলাকারীদের প্রতি গভীর আগ্রহের কথা জানায়।
হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, সে স্কুলের একটি মডেল তৈরি করেছিল এবং হামলার সময়সূচীও তৈরি করেছিল। হামলার দিন সে একটি টি-শার্ট পরে ছিল, যেখানে একটি ‘বুলস আই’ চিহ্ন আঁকা ছিল।
জেফ রুপনও তদন্তকারীদের জানান, তার মেয়ের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো ছিল না এবং সে আত্মহত্যার কথা বলত। তিনি আরও জানান, তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর ন্যাটালি হতাশ হয়ে পড়েছিল এবং মনোবিদের কাছেও চিকিৎসা নিচ্ছিল।
নatalির এক বন্ধু পুলিশকে জানিয়েছে, জেফ রুপনও প্রায়ই মেয়ের সঙ্গে রুঢ় ব্যবহার করতেন এবং তিনি মদ্যপান করতেন।
এই ঘটনার পর, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে স্কুলগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং পারিবারিক কলহের প্রভাব নিয়েও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
জেফ রুপনও-এর বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের দ্বারা সংঘটিত সহিংস ঘটনায় অভিভাবকদের দায়বদ্ধ করার ক্রমবর্ধমান প্রবণতারই একটি অংশ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন