নিউজিল্যান্ড, যা ভেড়া পালনের জন্য সুপরিচিত, তাদের কৃষি খাতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করছে। একসময় মানুষের তুলনায় ভেড়ার সংখ্যা ছিল অনেক বেশি, কিন্তু বিশ্ব বাজারের পরিবর্তনের কারণে সেই অনুপাত এখন হ্রাস পাচ্ছে।
দেশটির ভেড়া ও মানুষের অনুপাতের এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে বিশ্বব্যাপী পশমের দাম কমে যাওয়া এবং কৃষকদের লাভজনক অন্য পেশা বেছে নেওয়ার প্রবণতা।
অতীতে, নিউজিল্যান্ডের অর্থনীতিতে ভেড়া পালন ছিল এক অপরিহার্য বিষয়। ১৯৮২ সালে যখন দেশটিতে প্রায় ৭ কোটি ভেড়া ছিল এবং জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৩২ লাখ, তখন প্রতি জন প্রতি ২২টি ভেড়া ছিল।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে পশমের চাহিদা কমতে থাকে, বিশেষ করে সিনথেটিক ফাইবারের (synthetic fiber) কারণে। ফলে ভেড়া পালন থেকে কৃষকদের আগ্রহ কমতে শুরু করে।
বর্তমানে, নিউজিল্যান্ডে প্রতি ৪.৫ জন মানুষের জন্য একটি ভেড়া রয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জুন ২০২৪ পর্যন্ত দেশটির ভেড়ার সংখ্যা ছিল প্রায় ২ কোটি ৩৬ লাখ, যেখানে মানুষের সংখ্যা ৫৩ লাখ।
কৃষকরা এখন দুগ্ধ ও বনজ সম্পদের দিকে ঝুঁকছেন, যা তাদের জন্য বেশি লাভজনক। কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের জন্য বন তৈরি করে তারা কার্বন অফসেটিংয়ের (carbon offsetting) মাধ্যমেও অর্থ উপার্জন করছেন।
সরকার অবশ্য পশম শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা সরকারি ভবন নির্মাণ বা সংস্কারের ক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডের তৈরি পশমের পণ্য ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, কার্পেট ও ইনসুলেশনের (insulation) মতো সামগ্রী ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। তবে, এই ধরনের পদক্ষেপ ভেড়ার সংখ্যা হ্রাসের গতি কমাতে পারবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
নিউজিল্যান্ডের প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়াতেও একই ধরনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেখানেও ভেড়ার সংখ্যা কমছে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি তিনজন মানুষের জন্য একটি ভেড়া রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদিও বাংলাদেশের ভেড়া পালন সেভাবে হয় না, তবুও কৃষি অর্থনীতির এই পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা এবং স্থানীয় পরিস্থিতি অনুযায়ী কৃষকদের উন্নতিতে সহায়তা করা উচিত।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস