আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র! ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধের অশনি সংকেত?

যুদ্ধ পরিস্থিতি: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধের মেঘ, আতঙ্কে শহরবাসী

নতুন দিল্লি, ১১ই মে: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে, যা যুদ্ধের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। সীমান্ত অঞ্চলের শহরগুলোতে শোনা যাচ্ছে মিসাইলের শব্দ, বাড়ছে আতঙ্ক।

দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক বর্তমানে সর্বনিম্ন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে।

জম্মু-কাশ্মীরে বসবাসকারী আকিব পার্রে নামের এক ব্যক্তি জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি যখন স্থানীয় একটি দোকানের কাছে ছিলেন, তখন হঠাৎ করে সব আলো নিভে যায়। এরপর বিকট শব্দ শোনা যায়।

আতঙ্কে সবাই বাড়ির দিকে দৌড়াতে শুরু করে। তিনি আরও বলেন, “আমি আমার বাড়ির ছাদ থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উড়তে দেখি।”

এরপর তার ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। “জম্মু শহরে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি।”

জম্মু, শ্রীনগর, অমৃতসর, লাহোর এবং করাচীর মতো শহরগুলোতে যুদ্ধের ঘনঘটা লেগে আছে। কাশ্মীর সীমান্তে উভয় দেশের মধ্যে গোলাগুলি চলছে।

সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারী সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই জীবন বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তান থেকে ছোড়া আটটি ক্ষেপণাস্ত্র জম্মু ও সংলগ্ন এলাকায় আঘাত হানে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে এবং এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

তবে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর হামলায় পাকিস্তানের অন্তত ৬টি শহরে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি, কাশ্মীর উপত্যকার পাহালগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। এরপর থেকেই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।

পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসর শহরের বাসিন্দা সাবরপ্রীত সিং জানান, “পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। আমি রাতে ঘুমাতে পারছি না।”

আমি আমার পরিবারকে নিয়ে শহর ছাড়ার কথা ভাবছি, কারণ তারা সাইরেনের শব্দে ভয় পাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশই এখন প্রতিশোধের নেশায় মত্ত। তাদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার অভাব দেখা যাচ্ছে, যা উত্তেজনা আরও বাড়াচ্ছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনা গেলে, তা বড় ধরনের যুদ্ধের দিকে মোড় নিতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, তারা উভয় দেশের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছে এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছে।

তবে, উভয় দেশই আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের পরিবর্তে সামরিক পদক্ষেপের দিকে ঝুঁকছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুমন্ত্র বোসের মতে, “অবিলম্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। এই সংঘাত কোনো সমাধান দিতে পারবে না।”

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *