এখানে একটি উজ্জ্বল সাফল্যের গল্প, যা বিনোদন জগতের প্রেক্ষাপটে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। জনপ্রিয় ড্র্যাগ কুইন তারকা আলাস্কা থান্ডারফাক-এর (আসলে জাস্টিন অ্যান্ড্রু হনার্ড) সঙ্গীতনির্ভর প্রযোজনা ‘ড্র্যাগ: দ্য মিউজিক্যাল’ সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক সিটিতে সফলভাবে মঞ্চস্থ হয়েছে।
এই প্রযোজনাটি শুধু দর্শকপ্রিয়তাই অর্জন করেনি, বরং এর সাথে যুক্ত হয়েছে কিংবদন্তি শিল্পী লিজা মিনেলির মতো ব্যক্তিত্ব।
আলাস্কা এবং তাঁর সহকর্মীরা প্রায় আট বছর ধরে এই মিউজিক্যালটির উপর কাজ করেছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসে এর প্রথম প্রদর্শনী হলেও, নিউ ইয়র্কের অফ-ব্রডওয়ে মঞ্চে এর চূড়ান্ত রূপ দর্শককে মুগ্ধ করেছে। এমনকি, সাফল্যের চূড়ান্ত পর্যায়ে, তাঁরা লাইভ কাস্ট রেকর্ডিং অ্যালবামও প্রকাশ করেছেন, যা এখন শ্রোতাদের জন্য উপলব্ধ।
এই সাফল্যের পেছনে ছিল একটি দীর্ঘ যাত্রা। আলাস্কা জানিয়েছেন, সঙ্গীতের ধারণা তৈরি হওয়ার আগে তাঁরা এর মঞ্চায়নের কথা ভাবেননি। গানগুলোতে পরিবর্তন আনা হয়েছে, কিছু নতুন গান যোগ করা হয়েছে, আবার কিছু গানের দৈর্ঘ্য কমানো হয়েছে। চরিত্রগুলোতেও এসেছে পরিবর্তন।
তাই, নিউ ইয়র্কের অভিজ্ঞতার সাক্ষী হিসেবে এই লাইভ রেকর্ডিংটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
আলাস্কার মতে, এই পুরো যাত্রাপথে লিজা মিনেলির উপস্থিতি ছিল একটি বিশেষ পাওয়া। লিজা মিনেলি কেবল এই প্রযোজনায় একজন প্রযোজক হিসেবেই যুক্ত হননি, বরং অ্যালবামটিতেও তাঁর কণ্ঠ শোনা গেছে। আলাস্কা জানান, লিজা তাঁদের অভিভাবকের মতো ছিলেন এবং তাঁর এই যুক্ত হওয়া তাঁদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ ছিল।
“ড্র্যাগ: দ্য মিউজিক্যাল”-এর মাধ্যমে আলাস্কা সৃজনশীল প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, একটি কাজের শুরুটা কেমন হবে, তা সবসময় বলা সম্ভব হয় না। এমনকি, কাজটির ভবিষ্যৎ কী হবে, সে সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া যায় না। তবে, কঠোর পরিশ্রম ও একাগ্রতা থাকলে, একটি ধারণা কিভাবে বিশাল রূপ নিতে পারে, তা এই মিউজিক্যাল প্রমাণ করেছে।
নিউ ইয়র্ক সিটিতে এই শো মঞ্চস্থ করার অভিজ্ঞতা ছিল আলাস্কার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, লস অ্যাঞ্জেলেসের পরিবেশ থেকে নিউ ইয়র্কের পরিবেশ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানকার দর্শক ও থিয়েটার কমিউনিটির কাছ থেকে তিনি অনেক সমর্থন পেয়েছেন। ব্রডওয়ের অন্যান্য শো’র সঙ্গে যুক্ত থাকা অনেক শিল্পীও এই মিউজিক্যালটি উপভোগ করতে আসতেন, যা ছিল তাঁর জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা।
আলাস্কা মনে করেন, রুপাল’স ড্র্যাগ রেস-এর মতো অনুষ্ঠানগুলো ড্র্যাগ সংস্কৃতি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করেছে। এর ফলে, এখন অনেকেই ড্র্যাগকে একটি শিল্প হিসেবে মূল্যায়ন করতে শুরু করেছেন।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে আলাস্কা জানান, তিনি এখন প্রাইড সিজন উপলক্ষ্যে বিশ্ব ভ্রমণে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। এছাড়াও, তিনি ‘ড্র্যাগ: দ্য মিউজিক্যাল’-এর পরবর্তী সংস্করণ নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। এমনকি, সিনেমা নির্মাণের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা চলছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়।