প্রথম ভাষণে পোপের বিস্ফোরক ঘোষণা! আলো ছড়াতে প্রস্তুত?

ক্যাথলিক চার্চের নতুন পোপ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর, লিও চতুর্দশ-এর প্রথম প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভ্যাটিকান সিটির সিস্টিন চ্যাপেলে অনুষ্ঠিত এই বিশেষ প্রার্থনাসভায় পোপ ঘোষণা করেন, তিনি বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান “অন্ধকার রাত” দূর করতে চার্চকে একতাবদ্ধ করবেন।

৬৯ বছর বয়সী নবনির্বাচিত পোপ, যিনি পূর্বে কার্ডিনাল রবার্ট প্রিভোস্ট নামে পরিচিত ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তবে তিনি পেরুরও নাগরিকত্ব ধারণ করেন।

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর, বৃহস্পতিবার কার্ডিনালদের গোপন বৈঠকে নতুন পোপ নির্বাচিত হন লিও চতুর্দশ। এই নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি ২,০০০ বছরের পুরনো ক্যাথলিক চার্চের ইতিহাসে প্রথম মার্কিন পোপ হিসেবে অভিষিক্ত হলেন।

এই বিশাল দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি বিশ্বের প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীর নেতৃত্ব দেবেন।

প্রার্থনাসভায় দেওয়া ভাষণে নতুন পোপ স্বীকার করেন, অনেক সময় খ্রিস্টান ধর্মকে “অযৌক্তিক” এবং “দুর্বল ও বুদ্ধিহীনদের” আশ্রয়স্থল হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি আরও যোগ করেন, “ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসের অভাব প্রায়শই জীবনের অর্থহীনতা, দয়া প্রদর্শনে অবহেলা, মানুষের মর্যাদার চরম লঙ্ঘন, পরিবারে সংকট এবং সমাজের আরও অনেক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”

পোপ সতর্ক করে বলেন, যীশুকে কেবল একজন “আকর্ষণীয় নেতা বা অতিমানব”-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ করা উচিত নয়। তিনি বলেন, “এটা কেবল অবিশ্বাসী নয়, অনেক ব্যাপ্টিজম-প্রাপ্ত খ্রিস্টানদের মধ্যেও বিদ্যমান, যারা কার্যতভাবে নাস্তিকতার পর্যায়ে জীবনযাপন করে।”

নবনিযুক্ত পোপ চার্চের একজন “অনুগত প্রশাসক” হিসেবে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন। আগামী ১৮ই মে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে এবং ২১শে মে তিনি প্রথম সাধারণ শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন।

এই অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও ধর্মীয় নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে পোপ ফ্রান্সিসের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রায় ২ লক্ষ মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন।

ভ্যাটিকান জানিয়েছে, নতুন পোপ আপাতত শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের বহাল রাখবেন, যাতে তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় পান। প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে মারা যান।

তাঁর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে পোপ লিও চতুর্দশ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবেন। এর মধ্যে রয়েছে আর্থিক সংকট, এলজিবিটিকিউ (LGBTQ) সম্প্রদায়ের প্রতি চার্চের দৃষ্টিভঙ্গি এবং বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া ব্যক্তিদের প্রতি আরও উদার হওয়া যায় কিনা, সেই সম্পর্কিত বিতর্ক, সেইসাথে নারীদের চার্চের কার্যক্রমে আরও বেশি সুযোগ দেওয়া যায় কিনা, সেই বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত।

পোপ লিও শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করলেও, তিনি পেরুতে প্রায় দুই দশক ধরে মিশনারি হিসেবে কাজ করেছেন। জানা যায়, তাঁর পেরুর নাগরিকত্বের কারণে তিনি পশ্চিম এবং উন্নয়নশীল বিশ্বের উভয় অঞ্চলের সম্পর্কেই অবগত।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *