যুক্তরাষ্ট্রের কার্ডিনাল রবার্ট প্রিভোস্টের পোপ হিসেবে অভিষেক, ইতিহাসে নতুন দিগন্ত।
ক্যাথলিক বিশ্বে সম্প্রতি এক ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কার্ডিনাল রবার্ট প্রিভোস্ট পোপ নির্বাচিত হয়েছেন, যিনি পোপ লিও চতুর্দশ নাম ধারণ করেছেন।
এই প্রথম কোনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম গ্রহণকারী ব্যক্তি পোপ নির্বাচিত হলেন। এই ঐতিহাসিক ঘটনার পর, রোমে সমবেত হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন মার্কিন কার্ডিনাল।
তাদের আলোচনা ও প্রতিক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর, কার্ডিনাল প্রিভোস্টের অনুভূতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কার্ডিনাল জোসেফ টোবিন জানান, “আমি ববকে (প্রিভোস্ট) দেখেছি, তিনি দু’হাতে মুখ ঢেকে ছিলেন।”
আমি তার জন্য প্রার্থনা করছিলাম। যখন তিনি (পোপের দায়িত্ব) গ্রহণ করলেন, মনে হলো যেন সবকিছু তার জন্যই তৈরি।
নবনির্বাচিত পোপ লিও চতুর্দশ-এর সম্মানে, উত্তর আমেরিকার পন্টিফিক্যাল কলেজে (Pontifical North American College) এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এখানে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা এবং ভ্যাটিকানের পতাকা দিয়ে মঞ্চ সাজানো হয়েছিল। এই কলেজটি সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা থেকে অল্প দূরত্বে অবস্থিত, যেখানে পোপ লিও চতুর্দশ বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে তার প্রথম ভাষণ দেন।
এই অনুষ্ঠানে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলের কার্ডিনালরা একত্রিত হন। এদের মধ্যে নিউ জার্সির কার্ডিনাল জোসেফ টোবিন, নিউইয়র্কের কার্ডিনাল টিমোথি ডোলান, শিকাগোর কার্ডিনাল ব্লেজ কাপিচ এবং ওয়াশিংটনের কার্ডিনাল রবার্ট ম্যাকিলরয় উল্লেখযোগ্য।
তাদের সঙ্গে ছিলেন টেক্সাসের গ্যালভেস্টন-হিউস্টনের অবসরপ্রাপ্ত আর্চবিশপ ড্যানিয়েল ডিনার্ডো এবং ওয়াশিংটনের আর্চবিশপ উইলটন গ্রেগরি।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপোস্টলিক নুন্সিও, ফরাসি কার্ডিনাল ক্রিস্টোফ পিয়েরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এই কার্ডিনালরা সবাই কার্ডিনাল প্রিভোস্টকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন এবং তারা তাকে ‘বব’ নামেই ডাকেন।
তারা সবাই মনে করেন, পোপের আমেরিকান পরিচয় মুখ্য নয়, বরং তিনি কীভাবে বিশ্বজুড়ে ক্যাথলিকদের একত্র করতে পারেন, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তিনি পেরুর নাগরিকত্বও ধারণ করেন।
কার্ডিনাল গ্রেগরি বলেন, “আমাদের মধ্যে কে একত্রিত করতে পারবে, কে বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে পারবে এবং দুর্বল হয়ে যাওয়া স্থানে বিশ্বাসকে পৌঁছে দিতে পারবে, সেটাই আমাদের প্রধান চিন্তা।
পোপ লিও চতুর্দশ-এর নির্বাচন ক্যাথলিক চার্চের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যা বিশ্বজুড়ে ১.৪ বিলিয়ন ক্যাথলিকের উপর প্রভাব ফেলবে।
এই নির্বাচনে আমেরিকার ভূমিকা এবং নতুন পোপের নেতৃত্ব কেমন হবে, সেদিকে এখন সবার দৃষ্টি।
তথ্য সূত্র: Associated Press