যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, কার্ডিনাল লিও চতুর্দশ পোপ হিসেবে অভিষিক্ত, আহ্বান জানালেন বিনয়ের।
ভ্যাটিকান সিটি থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, শুক্রবার নতুন পোপ লিও চতুর্দশ তাঁর প্রথম গণপ্রার্থনা সভায় নেতৃত্ব দেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি ক্যাথলিক চার্চের সদস্যদের মধ্যে বিনয় এবং মিশনারি কার্যক্রমের ওপর জোর দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে নির্বাচিত হওয়া এই পোপের অভিষেক অনুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
বৃহস্পতিবার কার্ডিনাল রবার্ট প্রিভোস্টকে নতুন পোপ হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। ৬৯ বছর বয়সী এই ব্যক্তি শিকাগোর বাসিন্দা ছিলেন।
পোপ হিসেবে তাঁর অভিষেক, ক্যাথলিক চার্চের ইতিহাসে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। কারণ, তিনিই প্রথম মার্কিন নাগরিক যিনি এই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হলেন।
এর আগে, অনেক সময় এমনটা শোনা গেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে কোনো আমেরিকানকে পোপ হিসেবে বেছে নিতে দ্বিধা বোধ করতেন কার্ডিনালরা।
পোপ লিও চতুর্দশ তাঁর প্রথম ভাষণে যাজক সম্প্রদায়কে ‘ছোট’ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বিশ্বজুড়ে চার্চের মিশনারি কার্যক্রম আরও জোরদার করার কথা বলেন, বিশেষ করে যেখানে এর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
পোপের এই আহ্বান তাঁর পূর্বসূরি পোপ ফ্রান্সিসের অনুকরণে নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পোপ ফ্রান্সিস তাঁর পুরো সময়টাই সমাজের প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন।
নতুন পোপের অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কের আর্চবিশপ কার্ডিনাল টিমোথি ডোলান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পোপ নির্বাচনের ক্ষেত্রে লিও’র জাতীয়তা কোনো বিষয় ছিল না।
তিনি আরও বলেন, “তিনি বিশ্ব চার্চের পিতা। তিনি কোথা থেকে এসেছেন, সেটা গৌণ।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পোপ ফ্রান্সিসের বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ ছিল। অভিবাসন এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তাঁদের মধ্যে ভিন্ন ধারণা দেখা গেছে।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়, কার্ডিনালরা কি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ হিসেবে লিওকে বেছে নিয়েছেন? এর জবাবে কার্ডিনাল ডোলান জানান, এই নির্বাচনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক নেই।
ওয়াশিংটনের আর্চবিশপ কার্ডিনাল উইলটন ড্যানিয়েল গ্রেগরিও একই সুরে কথা বলেন। তিনি জানান, নির্বাচনের উদ্দেশ্য ছিল ঈশ্বরের প্রতি মানুষের বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করা।
পোপ লিও চতুর্দশ-এর সঙ্গে পোপ ফ্রান্সিসের অনেক মিল রয়েছে। যেমন—পোপ লিও’র জুতা নির্বাচনের ধরন এবং অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্পের প্রতি তাঁর সমালোচনামূলক মনোভাব।
তবে, ঠিক কতখানি তিনি পোপ ফ্রান্সিসের দেখানো পথে চলবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কারণ, নারীর অধিকার এবং পুরোহিত নিয়োগের বিষয়ে তাঁর আগের কিছু মন্তব্য ঐতিহ্যগত ক্যাথলিক মতবাদের প্রতি আনুগত্যের ইঙ্গিত দেয়।
পোপ লিও চতুর্দশের আনুষ্ঠানিক অভিষেক হবে আগামী ১৮ই মে, সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারে। জনসাধারণের সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে ২১শে মে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন