মায়ের স্মরণে: জন্মদিনের অজানা ইতিহাস!

আজ, আমরা সেই বিশেষ দিনটির কথা বলব যা সারা বিশ্বের মায়েদের প্রতি উৎসর্গীকৃত – ‘মা দিবস’। কিভাবে এই দিনটির জন্ম হলো, এর পেছনের ইতিহাস এবং সময়ের সাথে সাথে এর বিবর্তন নিয়ে আজকের আলোচনা।

আসলে, মা দিবস-এর ধারণা প্রথম আসে আমেরিকাতে, উনিশ শতকের শেষের দিকে। ১৮৭২ সালে, জুলিয়া ওয়ার্ড হাও নামের একজন লেখিকা ও শান্তিবাদী এই দিনটি পালনের প্রস্তাব করেন। তাঁর মতে, মা দিবস নারীদের একত্রিত করে শান্তির বার্তা দিতে পারে।

তিনি প্রতি বছর বোস্টনে এই উপলক্ষে একটি সভার আয়োজন করতেন।

তবে, আজকের দিনে আমরা যে মা দিবস পালন করি, তার পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন আনা জার্ভিস নামের একজন নারী। তিনি চেয়েছিলেন, তাঁর মায়ের প্রতি সম্মান জানাতে এবং সকল মায়ের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে।

আনা’র মা ছিলেন একজন সমাজসেবী এবং শিশুদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ। আনা ১৯০৮ সালে মা দিবসকে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রচারণা চালান।

আনা জার্ভিসের মা শিশুদের স্বাস্থ্য এবং ভালো থাকার জন্য বিভিন্ন ক্লাব তৈরি করেছিলেন। আনা চেয়েছিলেন, তাঁর মায়ের এই কাজগুলো বিশেষভাবে স্মরণ করা হোক।

পরবর্তীতে, ১৯১৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন ঘোষণা করেন যে, মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস হিসেবে পালন করা হবে।

শুরুতে মা দিবস পালনের একটি অন্যরকম চিত্র ছিল। মানুষজন এই দিনে গির্জায় যেত এবং মায়েদের প্রতি তাদের ভালোবাসা প্রকাশ করে চিঠি লিখত। সময়ের সাথে সাথে, কার্ড পাঠানো, উপহার দেওয়া এবং ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর রীতিও চালু হয়।

বর্তমানে, মা দিবস একটি বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। উপহার সামগ্রী এবং শুভেচ্ছা কার্ডের ব্যবসা এই সময়টাতে বেশ জমে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, ধারণা করা হয় যে, ২০২৫ সালে শুধু আমেরিকাতেই মা দিবস উপলক্ষে প্রায় ৩৪.১ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে।

যেখানে একজন মানুষ গড়ে প্রায় ২৫৯ ডলার খরচ করে তাঁর মাকে শুভেচ্ছা জানাবেন।

মায়েদের কাজের গুরুত্বও অনেক। মায়েরা শুধু পরিবারের দেখাশোনা করেন না, বরং সংসারের মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করেন। ঘরের কাজকর্ম থেকে শুরু করে পরিবারের সদস্যদের জন্য বাজার করা – মায়েরা সবকিছু সামলান।

মা দিবস উদযাপন একটি সুন্দর উপলক্ষ, যা মায়েদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। মায়েরাই আমাদের জীবনের আলো, আমাদের আশ্রয়স্থল।

তাই আসুন, এই দিনে আমরা সবাই আমাদের মায়েদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এবং তাঁদের প্রতি আমাদের ভালোবাসার কথা প্রকাশ করি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *