মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। প্রতিশোধের নেশায় এক ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি চালিয়ে এক পরিবারের ওপর হামলা করে, এতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে এবং পরিবারের পোষা কুকুরটিও মারা যায়।
অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পর কারাগারে রাখা হয়, কিন্তু শুনানির আগেই সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, এই ঘটনার মূল হোতা ছিলেন ৪৯ বছর বয়সী জেফরি এন্ড্রেস। তিনি গত ২৮শে এপ্রিল তার গাড়ি, একটি শেভ্রোলেট ট্রাভার্স, নিয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া একটি পরিবারের ওপর হামলা চালান।
হামলায় নিহত হন ৪১ বছর বয়সী ড. কামি হ্যানসেন। তিনি পেশায় একজন কাইরোক্রাক্টর ছিলেন। এছাড়া, পরিবারের একটি কুকুরও নিহত হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কামি হ্যানসেনের স্বামী পল হ্যানসেন এবং তাদের ১৩ বছর বয়সী ছেলেকে।
আদালতের অভিযোগ অনুযায়ী, এন্ড্রেস এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন প্রতিশোধের উদ্দেশ্যে। প্রসিকিউটরদের ভাষ্যমতে, হ্যানসেন পরিবারের এক সদস্যের বিরুদ্ধে এন্ড্রেসের পরিবারের এক শিশুর প্রতি ‘সংবেদনশীল অপরাধ’-এর অভিযোগ ছিল।
ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেও এন্ড্রেস সেই মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু নথি সংগ্রহ করেছিলেন। তদন্তে জানা গেছে, একসময় এন্ড্রেস এবং হ্যানসেন পরিবার প্রতিবেশী ও বন্ধু ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানায়, ঘটনার সময় এসইউভি গাড়িটি সরাসরি পরিবারটির দিকে তেড়ে আসে।
পল হ্যানসেনের ভাষ্যমতে, তিনি গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট হওয়ার শব্দ শুনেছিলেন, এর পরেই গাড়িটি তাদের ওপর উঠে আসে। একজন প্রতিবেশী জানিয়েছেন, ঘটনার সময় এন্ড্রেস অন্তত ২৫ মাইল গতির অঞ্চলে প্রায় ৬০ মাইল বেগে গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর এন্ড্রেস দাবি করেন, তিনি ঘণ্টায় ২৫ মাইল বেগে একটি গ্যাস স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি আত্মহত্যার চিন্তাভাবনার কথাও জানান।
এই ঘটনার পর এন্ড্রেসকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে খুন, হত্যার চেষ্টা ও পশু নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়।
সোমবার আদালতে তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ কোটি টাকার সমান) ধার্য করা হয়। অভিযুক্তের আইনজীবী এমিলি বেল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, ঘটনার একদিন পরেই মঙ্গলবার সকালে এন্ড্রেসকে তার কারাকক্ষে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি এবং পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
তথ্য সূত্র: পিপল