বিখ্যাত অভিনেত্রী লরেন ব্র্যাকো, যিনি “সপ্রানোস” এবং “গুডফেলাস”-এর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছেন, সম্প্রতি তার জীবনের এক কঠিন অধ্যায় নিয়ে কথা বলেছেন। ব্র্যাকো জানিয়েছেন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় তার সাথে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা আজও তাকে কষ্ট দেয়।
ব্রুকলিনে বেড়ে ওঠা ব্র্যাকো জানান, শৈশবে তিনি ছিলেন “লম্বা ও গড়নহীন”। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় সহপাঠীরা তাকে ‘সবচেয়ে কুৎসিত মেয়ে’ হিসেবে ভোট দেয়। এই কথাটি তার মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে এবং দীর্ঘদিন ধরে তিনি এর শিকার ছিলেন। সেই ঘটনার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমি বাড়ি ফিরে অনেক কেঁদেছিলাম।”
তবে ব্র্যাকোর বাবা তাকে সবসময় সাহস জুগিয়েছেন। বাবার সেই কথাগুলো আজও তিনি ভোলেননি। তিনি বলেন, “বাবা আমাকে কোলে বসিয়ে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন, ‘ওদের কথা ভেবো না। আমার কাছে তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে।’”
ছোটবেলার সেই কঠিন সময়ে অভিনয় ব্র্যাকোর কাছে ছিল মুক্তির পথ। তিনি স্কুলের বিভিন্ন নাটকে অংশ নিতেন, যা তাকে আত্মপ্রকাশের সুযোগ করে দিত। পরবর্তীতে মডেলিংয়ের সুযোগ পান এবং প্যারিসে পাড়ি জমান। এরপর “গুডফেলাস”-এর মতো চলচ্চিত্রে কাজ করে তিনি অভিনয় জগতে পরিচিতি লাভ করেন।
ক্যারিয়ারের শীর্ষে পৌঁছানোর পরও ব্র্যাকো সেই ছোটবেলার অপমানের কথা ভুলতে পারেননি। এমনকি একবার একটি প্রসাধনী প্রতিষ্ঠানের মডেল হওয়ার প্রস্তাব পেয়েও তিনি দ্বিধা বোধ করেছিলেন, কারণ তার মনে হয়েছিল তিনি তো ষষ্ঠ শ্রেণির ‘সবচেয়ে কুৎসিত মেয়ে’।
শুধু তাই নয়, বিবাহবিচ্ছেদ এবং পরবর্তীতে এক বছর ধরে তিনি গভীর হতাশায় ভুগেছিলেন। এই কঠিন সময় কাটিয়ে ওঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি সবসময় আমার জীবন অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমার মনে হয়, এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে একজন ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া এবং চিকিৎসার সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন। এতে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই।”
বর্তমানে ৭০ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী নিজেকে নিয়ে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী। তিনি আবার ভালোবাসার মানুষ খুঁজে পেতে চান। ব্র্যাকো বলেন, “আমি এখন একা, তবে আমি বিশ্বাস করি, কেউ না কেউ আসবে। আমি এমন একজন মানুষকে চাই যিনি আত্মবিশ্বাসী এবং হাস্যরসিক হবেন।”
তথ্য সূত্র: পিপল