যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভেন্স ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, দেশের নাগরিকদের জন্য আত্মনির্ভরশীল হওয়া জরুরি। তাঁর মতে, কোনো সংকটকালে আমেরিকান-নির্মিত ওষুধ ও অস্ত্রের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা সস্তা আমদানি পণ্যের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি, চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি এবং সম্ভাব্য কিছু পণ্যের সরবরাহ কমানোর বিষয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যের পরেই ভেন্সের এই বক্তব্য আসে।
গত ৮ই মে, বৃহস্পতিবার, ফক্স নিউজের উপস্থাপিকা মারtha ম্যাককলামের সাথে আলাপকালে, ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভেন্স, চীনের পণ্যের ওপর ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিষয়ে কথা বলেন। তিনি এই নীতির সমর্থনে বলেন, আমেরিকানদের আরও স্বনির্ভর হওয়া প্রয়োজন।
তাঁর মতে, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আমেরিকান সৈন্যদের হাতে ভালো মানের, দেশীয় অস্ত্র থাকাটা জরুরি।
এর আগে, গত ৩০শে এপ্রিল মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে ট্রাম্প শুল্কনীতি নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, হয়তো শিশুদের ৩০টির বদলে ২টি পুতুল দিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
কিন্তু দেশের প্রয়োজনে এটা মেনে নিতে হবে। ট্রাম্পের মতে, বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রকে অনেক দেশই ঠকিয়েছে, যার মধ্যে চীন অন্যতম।
শুল্ক বৃদ্ধি সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, এপ্রিলের শুরুতে ট্রাম্প বিদেশি পণ্যের ওপর শুল্কের হার ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছিলেন। ব্লুমবার্গ-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীন থেকে পণ্যবাহী জাহাজের আগমন প্রায় ৬০ শতাংশ কমে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ মে মাসের শুরুতে জানায়, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতি ০.৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
শুল্ক নীতির বিষয়ে প্রথমে অনড় থাকলেও, পরে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, চীন বাদে প্রায় সব দেশের জন্য ৯০ দিনের শুল্ক স্থগিত করা হবে। তবে চীনের ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ১২৫ শতাংশ বহাল রাখা হয়।
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প তাঁর এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, “আমি মনে করি, অনেকে একটু বেশি প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছিল…তারা কিছুটা ভীত হয়ে পড়েছিল।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। অন্য কোনো প্রেসিডেন্ট এটা করতেন না।
এই ঘটনার জেরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং মার্কিন অর্থনীতির ওপর কেমন প্রভাব পড়বে, সে বিষয়ে এখনো বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, শুল্ক বৃদ্ধির ফলে একদিকে যেমন কিছু ক্ষেত্রে দেশীয় উৎপাদন বাড়বে, তেমনি আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বাজারে পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল